Site icon মুক্তিপত্র

আইসিসির ধৃষ্ঠতা এবং আমাদের বিসিবির করনীয়

বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন ভারতীয় জুয়াড়ি দীপক আগারওয়াল। তার সেই প্রস্তাবের কারণেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ২ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।

কিন্তু ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ায় সাকিবের ওপর সন্তুষ্ট আইসিসি। নিষেধাজ্ঞা থাকা অবস্থায় আইসিসির বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার শর্তে সাকিবের শাস্তি এক বছর স্থগিত করে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।

যে জুয়াড়ির প্রস্তাবে ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হন সাকিব,তার নাম জানিয়েছে আইসিসি। ভারতীয় এই ক্রিকেট জুয়াড়ি আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিটের (আকসু) কালো তালিকাভুক্ত। তাই তার টেলিফোন কল রেকর্ড থেকে শুরু করে সব কিছু সম্পর্কে খোঁজখবর রাখে আকসু।

আইসিসি শচীনকে বল টেম্পারিংয়ের জন্য শাস্তি দিয়েছিল। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের চাপে তা প্রত্যাহারও করেছিল।।

ওয়ার্ণার আর স্মিথ ম্যাচ ফিক্সিং করে নিষিদ্ধ হয়েছেন এক বছরের জন্য।

অন্যদিকে সাকিব ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অফার পেয়ে শুধুমাত্র তথ্য না দেওয়ায় নিষিদ্ধ দুই বছরের জন্য। হ্যাঁ সাকিব তথ্য গোপন করে অপরাধ করেছে এটি নিয়ে কোন দ্বিমত নেই তবে সেটার কারনে শাস্তির যে পরিমান সেটা অনেকটা আইসিসির হিপোক্রেসিই বলা যায়।

আইসিসির বড় ভাই নীতির কারনে অতীতেও বিগ থ্রি’র বিভিন্ন অন্যায্য আবদারও আইসিসিকে মেনে নিতে এবং বিশ্বকাপ সহ বিভিন্ন ইভেন্টে ইংল্যান্ড, ইন্ডিয়া এবং অস্ট্রেলিয়া এই তিন দলকে ভেন্যু সিলেকশন সহ বিশেষ সুযোগ সুবিধা দিতে দেখা গেছে এমনকি বিশ্বকাপের মত আসরেও এসেছে আম্পায়ারিংএ প্রশ্নোবিদ্ধ সিদ্ধান্ত।

আইসিসির এই নতজানু নীতির একটাই কারন ক্রিকেট অর্থনীতি। আর বিগ থ্রি মেম্বাররা এই ক্রিকেট অর্থনীতিতে তাদের কন্ট্রিবিউশন মূলো ঝুলিয়ে আদায় করছে বিভিন্ন অন্যায় আবদার।

এই অবস্থায় বিসিবির যেটা করনীয় সেটি হল এই অর্থনৈতিক বিষয়টি সামনে এনে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে আইসিসির সাথে দেনদরবারে যাওয়া।

ভারত যেমন ধোনী বা কোহেলিকে নিয়ে আইসিসির সাথে যেমনটা করে ঠিক একইভাবে বিসিবি আইসিসিকে এটি বোঝানো লাগবে একজন সাকিব বর্তমানে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন, বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিবের জন্য ম্যাচের হাজারটা টিকেট বিক্রি হয়, কোটি কোটি টাকার স্পন্সর আসে এক সাকিবকে ঘিরে। এটিও বোঝানো লাগবে বাংলাদেশ আগামী বছর দশকের মধ্যে হতে যাচ্ছে আইসিসির ক্রিকেট অর্থনীতিতে দ্বিতীয় বৃহত্তর অংশীদার।

বর্তমান যুগে যে কোন ইশ্যুতে কোন দেশ বা সংস্থার সাথে দেনদরবারে অন্যান্য বিষয়ের চেয়েও অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগে স্বার্থ উদ্ধার একটি দ্রুত ও কার্যকরী প্রক্রিয়া। 

আর আমাদের বিসিবির কর্তারা যদি নিজেরা প্রথমে এ বিষয়টা বুঝে থাকেন তবেই আইসিসিকে বোঝাতে পারবেন।

আর দেশীয় ক্রিকেটারদের সাথে বিসিবির যে সম্পর্ক সেটা আরো পেশাদারিত্বের হওয়াটা কতটা জরুরি সেটি আর নতুন করে মনে করিয়ে দেয়ার কিছু নেই।

বিসিবি যদি এখনো বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে না নেয় তবে বাংলাদেশের ক্রিকেট জিম্বাবুয়ে বা কেনিয়া হতে বেশি দেরি নেই।

লেখাঃ Rai Han

Exit mobile version