Site icon মুক্তিপত্র

গ্রামাঞ্চলে করোনা পরিস্থিতি– মঠবাড়িয়া, পিরোজপুর থেকে

করোনা বা COVID-19 এর উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা এখন বাংলাদেশব্যাপী।

রাজধানী ঢাকা শহর থেকে শুরু করে অন্যান্য শহরগুলোতে বসবাস করা লোকজন একটু নড়েচড়ে বসলেন। কেউ কেউ বিভিন্ন দাবীসহ চাকুরীজীবী মানুষের ছুটি দাবী করলেন, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সঙ্গত কারনেই মানুষকে নিজগৃহে থাকার জন্য ছুটি ঘোষণা করেছেন।

মানুষজন ইদের ছুটির মতো গ্রামে ফিরছেন, পথে প্রচন্ড লোকসমাগম তৈরি হচ্ছে, লঞ্চ এবং রেলওয়ে বন্ধ করার কারনে অন্যান্য যানবাহনগুলো কয়েকগুণ বেশি ভাড়া আদায় করে নিচ্ছে। শহর ফেরত লোকজন গ্রামে ফিরে শুভেচ্ছা বিনিময় করছে ইদের মতোই, এতে গ্রামে করোনার শঙ্কা আরো বেড়ে যাচ্ছে।

দোকান পাট বন্ধ হওয়ার পূর্ভাবাসেই মানুষজন খাদ্য সংকটের ভয়ে ও আসন্ন রোজাকে ঘিরে প্রচুর খাদ্য মজুদ করছে, ব্যবসায়ীরাও ঝোঁপ বুঝে দাম হাঁকাচ্ছে এবং তৈরি হচ্ছে কৃত্রিম সংকট। মূলত পিঁয়াজ সংকট ও লবণ গুজবের এটাই বহিঃপ্রকাশ।

গ্রামের মানুষের বদ্ধমমূল ধারণা হচ্ছে করোনা আক্রান্ত শুধু আক্রান্ত দেশগুলো থেকে ফেরত প্রবাসীরা এবং করোনাকে কেউ কেউ আল্লাহর গজব বলেই আড্ডা জমাচ্ছে , যেকারনেই ভারতকে বিদেশ মনে করেনা এমন খবর গণমাধ্যমে এসেছে এবং বিভিন্ন গুজবের(থানকুনি পাতা) উদ্ভব শোনা যায় । একারণেই অনেক বেশি সচেতনতা তৈরির উদ্যোগ নেয়া উচিত সরকারি ও বেসরকারিভাবে।

মাস্ক -স্যানিটাইজার ক্রয় ক্ষমতা গরীব মানুষের নেই এবং বেশিরভাগ মানুষ এগুলোর সঠিক ব্যবহারও জানেনা। লক্ষণীয় যে কেউ কেউ মাস্ক ক্রয় করেও পকেটে বা হাতে নিয়ে ঘোরে আবার কেউ কেউ রুমাল বা মাফলার পেচিয়ে এবং পলিথিন দিয়ে গ্লাভস বানিয়ে বাঁচার পথ খোঁজে। স্বপ্রণোদিত স্বেচ্ছাসেবক সংখ্যায় কম কারন তাদের PPE নাই এবং গ্রামে আক্রান্ত হলে চিকিৎসা পাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা নেই। মনে হচ্ছে যে কারনে অনেকেই জ্বর -সর্দি -কাশি লুকাচ্ছে।

এটা নেহাৎ সচেতনতারই অভাব।

মানুষের মধ্যে ভয় ও আতংক তৈরি হয়েছে ব্যপকভাবে।

যতোটা না করোনা, তার চেয়ে প্রশাসনকে ভয় পাচ্ছে বেশি–যদিও প্রশাসনের উপস্থিতি মানুষের নিরাপত্তাই হওয়া উচিত। গ্রামে পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই এটি উদ্বেগকে বাড়িয়ে তোলে আবার দ্বায়িত্ববান ব্যক্তিদের বিতর্কিত বক্তব্য নিয়ে গ্রামেও হাঁসির আড্ডা জমে। শ্রমজীবী, দিনমজুর মেহনতী মানুষের চোখে জল ছল ছল করে করোনার মাঝে না আবার অনাহারে মরতে হয়। বিশেষ করে বন্যাঞ্চলগুলোর মানুষদের করোনাকালে আল্লাহ’র কাছেই করুণা চাইতে হয়।

সবাই প্রার্থনা করে দেশের জন্য।

দোয়া করছেন সকলেই বাঁচতে চায়।

Exit mobile version