বিশ্ববিদ্যালয় মানে কেবল ইট-কাঠ-পাথরের কতগুলো ভবন বা বইপত্র আর ক্লাস-পরীক্ষা নয়— বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে সত্যের পথে নিরন্তর চিন্তা ও জ্ঞানের চর্চা; শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মিথস্ক্রিয়ায় গড়ে ওঠা এক মুক্ত তপোবন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রামী ছাত্র-শিক্ষকদের অভিবাদন জানাই— বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই চরিত্রকে উর্দ্ধে তুলে ধরায়। সত্যের পথ চিরকালই কঠিন, সত্যান্বেষী মননের পাশাপাশি একটি দৃঢ় মেরুদণ্ডও অবশ্যই থাকতে হয়। অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌসের এই ছবিগুলো বাংলাদেশের ধুকে ধুকে মরতে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য নতুন সম্ভাবনা ও ভবিষ্যতের বার্তা দিচ্ছে।
পড়ে গিয়েও কীভাবে উঠে দাঁড়াতে হয়— সমস্ত বাংলাদেশের সত্যসন্ধানী মানুষ তার পাঠ নিয়ে নেবে। সাঈদ ফেরদৌস, রায়হান রাইন, মির্জা তাসলিমা সুলতানা সহ জাহাঙ্গীরনগরের লড়াকু শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মশাল জ্বেলে দিলেন। আমাদের কাজ সেই আলো সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়া।
অধ্যাপক ফারজানা একজন প্রমানিত দুর্নীতিবাজ। যাদেরকে দুই কোটি টাকা ঈদের সেলামী দিয়েছিলেন, সেই ছাত্রলীগ গতকাল নুন খাওয়ার গুণ গাইতে নিজের শিক্ষক ও সহপাঠীদের আঘাত করেছে। সেই আঘাতে কেবল পেশির জোর আছে, কিন্তু এতোটুকুও নৈতিক মনোবল অবশিষ্ট নেই তাদের। এ যাত্রা ফারজানা তাদের বরাতে রেহাই পাবে না। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, প্রত্যক্ষ দুর্নীতির দায় নিয়েও উপাচার্য নামের এই পাপাচার্য এখনো টিকে আছে কীভাবে? এই রাষ্ট্র ও সমাজে বোধবুদ্ধি কাণ্ডজ্ঞানের কি আর লেশমাত্রও অবশিষ্ট নেই?
এই প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে আছে আসলে একটি ১৪শ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের অন্তরালে— যে প্রকল্পটি বানানোই হয়েছে লুটপাট আর দুর্নীতি করে ভাগ-বাটোয়ারা জন্য। আর তাই এতটা নির্লজ্জ হয়ে টিকে আছেন ফারজানা, যারা টিকিয়ে রাখার পেছনে শক্তি যোগাচ্ছে, তারা ফারজানা ইসলামের চেয়েও বেশি নির্লজ্জ। প্রকল্পের মাঝখানে যদি উপাচার্যকে সরে যেতে হয়, তাহলে লুটপাট ও বাটোয়ারার যে পুরোনো ডিজাইনটি বানানো আছে, তা ভেস্তে যেতে পারে। এ কারণে তারা ওই পাপাচার্য ফারজানা ইসলামকে কোনোভাবেই সরাতে দেবে না।
জাহাঙ্গীরনগরের লড়াই, স্পষ্টত সত্য আর মিথ্যার লড়াই। কোনোভাবেই এ লড়াই কেবল জাহাঙ্গীরনগরের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নয়; এটা সর্বজনের স্বার্থের সাথে যুক্ত। জাহাঙ্গীরনগরে পাশে দাঁড়াতে আজ বিকাল তিনটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সংহতি ও প্রতিবাদ জানাতে হাজির হন।
বাকি বিল্লাহ একজন সাবেক ছাত্রনেতা