মোট ভোটারের মাত্র ১৪.৮৪(উত্তর) এবং ১৭.৩০(দক্ষিণ) শতাংশের ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন এবারের মেয়রগণ। নব্বই-পরবর্তী যেকোনো নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩৩ শতাংশের কম ভোট পায়নি, এমনকি ২০০১ সালের নির্বাচনে ভরাডুবির সময়ও আওয়ামী লীগ ৪০ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। এদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় কোনো প্রার্থী যত শতাংশ ভোটই পাননা কেন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মাঝে সর্বোচ্চ ভোট পেলেই তিনি জয়ী হিসেবে বিবেচিত হন।
সদ্য হয়ে যাওয়া ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নির্বাচিত মেয়রগণের প্রাপ্ত ভোট অনুযায়ী তারা যথাক্রমে ৮৫.১৬ এবং ৮২.৭০ শতাংশ মানুষের সমর্থন পাননি। স্বাভাবিকভাবেই ধরে নেয়া যায়, যারা প্রকৃত সমর্থক তারা কখনো তাদের পছন্দের প্রার্থীকে কিংবা প্রতীকে ভোট না দিয়ে ঘরে বসে থাকেনানা। এটা তাদের রাজনীতিবিমুখতা কিংবা যাইহোক না কেনো এই বিপুল সংখ্যক ভোটারের মতকে এড়িয়ে যাবারও কোনো সুযোগ নেই।
বিপুলসংখ্যক মানুষ যেহেতু আওয়ামিলীগকে ভোট দেননি স্বাভাবিকভাবেই নির্বাচন প্রত্যাহার করা বিএনপির হরতালে অনেক লোকসমাগম হবার কথা ছিলো। কিন্তু বিএনপির হরতালেও সাধারণ মানুষের কোনো উপস্থিতি ছিলোনা।
মাত্র কয়েকমাস আগে এমন চিত্র দেখা যায় রংপুর ৩ আসনের উপনির্বাচনে। সেই নির্বাচনে ভোট দিয়েছে মাত্র ২১.৩১ শতাংশ মানুষ।
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল এবং গণতান্ত্রিক একটি দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ থেকে নিজেদের বিরত রাখছে, এটা অবশ্যই উদ্বেগজনক।
নির্বাচন কমিশনের হিসাব অনুযায়ী এবার ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ভোট পড়েছে ২৫.৩ শতাংশ। আর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ৩০ শতাংশের মতো। ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ মানুষ কেনো ভোট দিচ্ছেনা এটা নিয়ে যদি কারো মাথাব্যাথা না থাকে, তাহলে বাংলাদেশের জন্য হয়তো অদূর ভবিষ্যতে এমন কিছুই অপেক্ষা করছে যেটা দেখার জন্য হয়তো আমরা কেউই প্রস্তুত নই।
আওয়ামিলীগ এবং বিএনপি দুই দল মিলেও যদি ৩০ শতাংশ মানুষের ভোট না পায়, তাহলে দুদলেরই উচিত তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে ভেবে দেখা। বাকী ৭০ শতাংশ মানুষ নতুন দলের অপেক্ষায় নাকি পুরোনো দলকেই নতুনভাবে দেখার অপেক্ষায় সেদিকে সকলের নজর দেয়া উচিত।
এস এম মুস্তাফিজ রিদম