যখন লিখতে বসলাম তখন সময় রাত দুটোর কিছুটা বেশি।
বিবেকের তাড়নায় লেখা, যদিও বিস্তর লেখার অভ্যাস নেই। আজ আমাদের দেশে যে পরিমানে দুর্নীতি হচ্ছে তা প্রশাসনের একটু খোঁচাতেই বেরিয়ে আসছে। তবে আজ আমি দুর্নীতির বিষয়ে লেখব না।
আজকে লিখব নিজ পায়ে দাড়ানোর সাধ নিয়ে।
ব্রিটিশরা থাকা অবস্থায় আমাদের ভারত উপমহাদেশ হিসেবেই ধরা হত। আমরা ছিলাম অবহেলিত জনগোষ্ঠী। ছিলনা আমাদের আজকের মত এত চাহিদা, সুখ আর চাকরি ছিল কল্পনাতিত। আমরা তাদের দুশ বছরের শাসন থেকে নিস্তার পেলাম, ভারতবর্ষ থেকে স্বাধীন হলাম ।
তারও বেশী স্বাধীন হলাম যখন ভারতবর্ষ ভেঙ্গে ভারত-পাকিস্তান নামে দুটি রাষ্ট্র হল।আমরা আবারও পরাধীন হলাম কারন ব্রিটিশ শাসন ছেড়ে পাক শাসনের জোয়াল কাঁধে নিলাম চলে গেল ২৩ বছর ।
স্বাধীন হলাম এবার আমরা। পেলাম নিজেদের দেশ, যেখানে আমরাই আমাদের শাসন করব। থাকবেনা অবহেলা,নিজেেদের মত নিজেরা থাকব।
অথচ পূর্বের সমস্যা আজও বিদ্যমান।আমরা পারিনি ছাড়তে গোলামীর রেওয়াজ। ক্ষমতার মসনদে বসার জন্য সবাই গোলামীতে ব্যাস্ত। আজ তাদের কাছে জিম্মি আমরা। দুটো শক্ত সমর্থ পা থাকা সত্ত্বেও আজ সঠিকভাবে দাড়াতে পারছিনা। বলতে পারছিনা বলিষ্ঠ কন্ঠে যে আমরা কারো গোলামী করি না।
আজ আমরা একটা প্রতিবেশী দেশের কাছে কি পরিমানে নির্ভরশীল। দূর থেকেও তারা আমাদের নিয়ন্ত্রন করে– এমনকি আমাদের কাঁচা বাজার পর্যন্ত। সপ্তাহ খানেক আগে পেঁয়াজের দাম যত তার অর্ধেক বেশী তার পরবর্তী সপ্তাহে, ধরুন ৭০ টাকা। মানুষের মাথায় হাত ।
শুরু হল তা নিয়ে সমালোচনা । মন্ত্রি সাহেব ঘোষনা করলেন যে সপ্তাহ খানেকের মধ্যে পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল হয়ে আসবে। অথচ তার ঘোষনার একদিন পর ১০ টাকা বেড়ে দাম হল ৮০ টাকা । তারমাঝে আবার হুট করে পার্শ্ববতী দেশ থেকে বন্ধ করে দেয়া হল পেয়াজ রপ্তানী । যে পেঁয়াজ আজ আমরা ৮০ টাকা দরে কিনে খাচ্ছি সে পেঁয়াজ ভারতে ৪-৫ টাকা কেজি। কিভাবে আমরা স্বাধীন, আজও তাদের কাছে আমরা ধরা টাকা দিয়ে পন্যে আমদানী করি, তারপরও তাদের কতশত শর্ত আমাদের জুড়ে দেয়।
আজকে যদি আমরা মাঠ কে মাঠ জমি ফেলে না রেখে আবাদ করতাম, তবে এই ফসল টাকা দিয়ে কেনাও লাগত না। কারো মুখাপেক্ষিও হওয়া লাগত না।
আমরা তাদের অনুষ্ঠানে টনে টনে উপহার পাঠাই আর তারা আমাদের সীমান্তে গুলি করে মারে। আমরা ইটপাটকেল মারব সেতো পরের কথা, তা নিয়ে কথাও বলতে পারিনা।
তবুও আমরা কাগজে কলমে স্বাধীন। তবে সত্যিকারে আজও আমরা স্বাধীন নই।
আমাদের প্রয়োজন পরনির্ভরশীলতা কমিয়ে জনমনে বিপ্লব ঘটানো।তবেই আমরা স্বাধীনতার স্বাদ পাব।
#ভুলভ্রান্তি ক্ষমা করবেন।
লেখকঃ আবু ছাদেক কুমিল্লার তিতাস উপজেলার সাতানী এলাকার বাসিন্দা।