সেই ১৯৭১ সাল, ২৫শে মার্চের কালো রাত্রি, আমাদের রক্তে মাখা ইতিহাসের একটি ভয়ংকর অধ্যায়। হাজার হাজার পাক হানাদার বাহিনী নেকড়ের মত ঝাঁপিয়ে পরে লক্ষ লক্ষ অসন্দিগ্ধ, ঘুমন্ত বাঙালির উপর। নির্মম মৃত্যুর শিকার হয় অনেকেই। আমাদের অপরাধ ছিল একটাই, আমরা স্বাধীন বাংলার স্বপ্ন দেখার দু:সাহস দেখিয়েছিলাম।
দীর্ঘ ৯ মাস আর তিরিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময় আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের উপাধি তো অর্জন করেছি বটে কিন্তু স্বাধীনতা ঠিক সেই ৪৮ বছর আগের মতই আজও আমাদের নাগালের বাইরে।
৪৮ বছর পর আজও, ঠিক সেই ৪৮ বছর আগের মতই এই বাংলার বুকে আমাদের বাকস্বাধীনতা চর্চা করার অপরাধে পশুর মতন পিটিয়ে, অত্যাচার করে হত্যা করা হয়। তথাকথিত স্বাধীন বাংলাদেশে ভারতের রাজত্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে অকাল মৃত্যুর শিকার হতে হয় আবরারদের।
এতো কিছুর পরও বাকস্বাধীনতার ধরনটাই এমন, যতই কষ্ট হোক, যতই বাধা বিপত্তি আসুক, যতই ঝুঁকি নিতে হোক, যতই মেরে ফেলুক এর চর্চা আপনাকে চালিয়ে যেতেই হবে। এমনকি এর বিনিময়ে আপনাকে যদি সবকিছুও হারাতে হয়, তারপরেও।
ছাত্রলীগ, তাদের পৃষ্ঠপোষক আওয়ামীলীগ, তাদের পুলিশ বাহিনী সবাই চাবে আপনাকে থামিয়ে দিতে। কিন্তু তারা সংখ্যালঘু, আর আপনি, আমি, আমরা সবাই সাধারণ জনগন, আমরা ষোলকোটি, আমরা সবাই আবরার, আমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ।
যারা নিজের জীবন বাজি রেখে স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলে, তারা কিন্তু এই লড়াই ব্যক্তিস্বার্থে করে না, তারা লড়াই করে আপনার আর আমার জন্য। তারা জানে যে তারা হয়তো তাদের লড়াইয়ের শেষটুকু দেখে যেতে পারবে না। তারা জীবন দেয় যেন আপনি আর আমি একটি স্বাধীন বাংলাদেশে বাস করতে পারি।
কতটুকু ঋণী আমরা এই আবরারদের কাছে? এই ঋন আমাদের শোধ করতেই হবে। আবরারের রক্তের প্রতিটি ফোটা সবার কানে কানে বলে গেছে, “কখনো ভুলিস নে”।
লেখাঃ শামস রহমান