Site icon মুক্তিপত্র

পুলিশ দ্বারা নির্যাতিত সাংবাদিক বলছি!

দেশে এক ক্রান্তিকাল চলছে আমরা সবাই জানি। সরকার ঘরে থাকার কথা বলে সব বন্ধ করে দিয়েছে , তার সাধুবাদ পেয়েছে জনগণের কাছে।

তারপর ও কিছু মানুষ একান্ত প্রয়োজনে বা উৎসাহী হয়ে বাহিরে বের হয়। তাই সরকারের বিভিন্ন বাহিনী দেশের সেবা দিচ্ছেন মানুষকে ঘরে থাকার জন্য। তবে সবচেয়ে কাছে গিয়ে মানুষের সাথে মিশে সেবা দিচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ। আর তাদের সাথে সাথে হাজার হাজার গণমাধ্যমকর্মী সেই ভালো খবর গুলো পৌঁছে দিচ্ছে মানুষের কাছে।

আজ বেলা ৩ টার সময় এক অনাকাঙ্ক্ষিত আঘাত আসে আমাদের উপরে। যা কোন ভাবেই কাম্য না বাংলাদেশ পুলিশ দ্বারা। রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর আবাসিক এলাকার এক হাসপাতালে যায় আমার এক বিশেষ প্রতিনিধি। কেবল একজন ক্যান্সার আক্রান্ত মানুষকে রক্ত প্রদান করতে। তার আগে বলে নেই রক্ত দিয়েছে আমার এক নিকট আত্মীয়কে তাই রক্ত দেওয়া শেষে আমার সাথে কথা হয় যে ভাই আমার বেশ দুর্বল লাগছে আপনি একটু আসেন আমাকে ধরে বাসায় দিয়ে আসুন। আমি ও যাই তাকে আনার জন্য। ২ জনই হেঁটে হেঁটে আসছিলাম কারন বাসা কাছেই ছিল তাই কিন্তু এই হাটা টাই আমাদের কাল হয়ে দাঁড়ালো।

রূপনগর আবাসিক মোড়ে আশার সাথে সাথে আমার প্রতিনিধিকে কিছু বুঝে উঠার আগেই বেদম মারছিলো। আমি হতভম্ব হয়ে মোবাইল বের করে ক্যামেরা অন করছিলাম। মোবাইল হাতে নিতে নিতেই ১২-১৫ জন পুলিশ আমার উপর হায়নাদের মতো ঝাঁপিয়ে পড়লো। নিজের আইডি কার্ড দেখিয়ে বার বার চিলাচ্ছিলাম ভাই একটু থামুন আমরা সাংবাদিক। কিন্তু কে শুনে কার কথা দায়িত্বরত সবাই যে যেভাবে পেরেছে মেরেছে আমাদের। কেউ ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে, কেউ স্ট্যাম্প দিয়ে, কেউ বা বাঁশ দিয়ে আর ওসি তদন্ত মোক্কারম নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন আর গালি দিচ্ছিলেন এবং তিনি আমার হাত থেকে টাকাসহ মানিব্যাগ টা ও ছিনিয়ে নেন। ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা ছিল সব হাওয়ায় মিলে গেলো মিনিটেই আর একজন পুলিশ আমার আই ফোন নিয়ে আমার ফোনের সব মুছে দিলেন আর বার বার বলতেছিলেন সালার সব রেখে দিয়ে থানায় নিয়ে যা।এর মধ্যে আমার রক্ত দেওয়া ছোট ভাইটির হাত ফেটে ফিকনি দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল দেখে মাথায় কাজ করছিলো না। অনেক হাতজোড় করে হাত পা ধরে কোন ভাবে শূন্য মানিব্যাগ আর মোবাইলটা কোন ভাবে নিয়ে ওরে ছাড়িয়ে নিয়ে কর্ম ক্ষেত্রে ফিরলাম। ভেবছিলাম কাউকে জানবো না চুপ করে থাকবো। কিন্তু অফিসের সহকর্মীরা ধরে মিরপুর ইসলামি ব্যাংক হসপিটালে নিয়ে যায় এবং প্রতিবাদ স্বরূপ নানা জায়গায় ফোন করে বিষয়টি জানান।

ছবি- শওকত হায়দার
ছবি- শওকত হায়দার
ছবি- শওকত হায়দার
ছবি- শওকত হায়দার

আমি জানি পুলিশ ভাইরা আপনারা বেশ ক্লান্ত দায়িত্ব পালন করতে করতে। তাই বলে কি ১৫-২০ জন পুলিশের একজনের মনে ও দয়া হল না সাংবাদিক বলে বলে চিৎকার দেয়া মানুষগুলো কে একটু বাঁচাই। যাইহোক দায়িত্ব পালনের কাজে আমরা সাংবাদিকরা নানা ভাবে নির্যাতিত হই বা হয়েছি। দিন শেষে কি পাচ্ছি একজন ওসি বা একজন দায়িত্বরত পুলিশর দুঃখিত বলা ছাড়া। আমার ৪ টা আঙ্গুল থেঁতলে দিয়েছে বাম পা এক রকম ভেঙ্গে দিয়েছে। পা এর মাংস গুলো ফুলে রক্ত জমাট হয়ে আছে কাল কেটে দুষিত রক্ত বের করবেন ডাক্তাররা বলেছেন। আমি বা আমরা এতো টাই আপনাদের চোখের শত্রু হয়ে গেলাম পরিচয় দেবার পর ভুয়া সাংবাদিক বলে পায় দিয়ে পাড়া দিলেন ,থেতলে দিলেন । এখন কি আমি ও বলবো আপনার ভুয়া দায়িত্ব পালন করছেন বা ভুয়া আইনের দোহাই দিয়ে যাকে ইচ্ছে তাকে মারছেন। না আমি তেমন বলবো না কারন আমি ইতিমধ্যে ভুলে গিয়েছি আজকের ঘটনাটা কারন জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে আপনাদের বেশি দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে তাই। আর আবেদন করছি নতুন আইজিপি মহাদয়ের কাছে একটু সহনশীল হয়ে মানুষকে আঘাত করতে বোঝাবেন দয়া করে , আর আমরা যেই হই না কেন প্রকৃতি কিন্তু কেউ কে ক্ষমা করবেন না। আমার শিশু বাচ্চাদের চোখের জ্বল আপনাদের ক্ষমা করবেনা !!! আর পিটুনির আগে মনে রাখবেন পুলিশ সাংবাদিক সবাই মানুষ আর দায়িত্বর ক্ষেত্রে সবাই সবার বন্ধু!!!

শওকত হায়দার , সম্পাদক enews71.com

Exit mobile version