“ফেসবুক” এক উন্মুক্ত ময়দানের অমিমাংসিত বন্ধুবৃওের ডিজিটাল নেটওয়ার্ক।এখানকার সুফলতা, সফলতার গল্প যেমন লম্বা তেমন সমাজে এর কুপ্রভাবের দাড়ি কমাগুলো একদম কম না। আমার আজকের এ আলাপটা শেষ বাক্যটা নিয়ে। আমরা আজকাল দেখছি এর যথোপযুক্ত ব্যাবহারকারীর সংখ্যা যতটা না বেশী তার থেকে বেশী বাজে কনটেন্টের শেয়ার আর অপ্রয়োজনীয় যাচ্ছেতাই ফটো, ভিডিও এর ছড়াছড়ি।
আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশে প্রযুক্তির চাহিদা অনেক বেশী।একারনেই উন্নত দেশের প্রযুক্তি বিকিকিনির এক বড় বাজার বাংলাদেশ। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ব্যাবহারকারীরা যদি ফ্রিতে একটা অ্যাপস হাতের মুঠোই পেয়ে যায় তখন সেটার লাগাম টেনে না ধরতে পারলে সমাজে এর প্রভাব বিস্তর করাটা অনেক সহজ। ফেসবুক সে রকমই একটা অ্যাপলিকেশন যেটার সিংহভাগ আয় আসে বিজ্ঞাপন, পেইড পেইজ থেকে। কিন্তু ব্যাবহারকারী থেকে সরাসরি টাকা নেয়ার ব্যাবস্থা নেই।
এখনকার সময়ে অনেকে নিজে বিখ্যাত হওয়ার জন্যও এটা ব্যাবহার করে এমনকি ব্যাবসা পরিচালনার এক অন্যতম মাধ্যমও বটে। কিন্তু বিপওিটা হচ্ছে কেউ যদি এটা ব্যাবহার করে কোন মিথ্যা সংবাদ, বাজে কন্টেনট, কুরুচিকর ছবি বা ভিডিও শেয়ার করে। আমরা দেখেছি নিউজিল্যান্ডে হামলার সময় হামলাকারী হত্যার ভিডিও লাইভে প্রচার করেছে।
এদেশে লাশের ছবির পাশে দাড়িয়ে সেলফি তোলার ঘটনা ঘটছে, নির্মম অত্যাচারের ভিডিও আপলোড করা হচ্ছে, কারো ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কুরুচিকর কমেনট করা হয়। তাই বলা যায় মোটামুটি ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবি সবাইকে নির্দিধায় ফেসবুক জয় করে নিয়েছে। মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের একটা বড় অংশ যদি ফেসবুক গিলে নেয় তাহলে ভবিষ্যতের দিনগুলো নিয়ে ভাবার সময় এখনি। কেউ আর পাহাড়ে যায়না, কেউ সমুদ্রে যেতে চায়না, কেউ নিয়ম করে হাঁটতে যায়না। কেউ বই পড়ছে না আমার তো মনে হয় যাদুঘরে এরপর বইয়ের ঠাঁই হবে।
বুড়ো আঙ্গুলের যাদুতে পড়েছি সবাই, মাথার যাদুর দিন ফুরিয়ে গেল বুঝি।
টমাস রায়, Senior Software Engineer, Xoom Energy Japan.