প্রথম কথা হলো, আমাদের ভুল করার অধিকার দিতে হবে এবং তা সংশোধনেরও অধিকার থাকতে হবে। আরও একটি বিষয় হলো, প্রথম আলো ভুল করার পরে সংশোধন করেছে এবং এই সংশোধন সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতায় গ্রহণযোগ্য বিষয়। এবং দ্বিতীয়ত, প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে দেখলাম যে ঘটনার সময় ও তারিখ ভুল করেছে। ফলশ্রুতিতে, এজহার নতুন করে আবার করা যাবে না, এমনকি এজহারে তথ্যগত ভুলের কারনে মামলা বাতিল হতে পারে।
তৃতীয়ত, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর কথায় বিশ্বাস করার কোন কারন নেই। যদি করেন, তবে কেন করছেন তা আল্লাহ জানে! কেননা, মামলা হবার ৩ ঘন্টার মাঝে শামসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে! কিন্তু আমরা তো শুনেছিলাম, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কোনো সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হবে না বলে এমন একটি প্রশাসনিক আদেশ সব দপ্তরে দেওয়া আছে। ২০২২ -এর ২২শে অক্টোবর, আইনমন্ত্রী এডিটরস গিল্ড আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে সাংবাদিকদের অভিযোগের সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হবে না। অভিযোগ করা হলে একটি সেল সিদ্ধান্ত নেবে, যে আইনের আওতায় অপরাধ হয়েছে, তার প্রাথমিক প্রমাণ আছে কি না’। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। আমাদের কান বন্ধ নেই। আইনের অপব্যবহার সম্পর্কে আমরা সচেতন’। আর এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, ‘তাকে (শামসুজ্জামান) রাতের অন্ধকারে ধরে নিয়ে যেতে হবে কেন’? তাই, এমন প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমি তো বললাম, আমাকে জানতে হবে’।
এখন, চতুর্থ এবং শেষ কথা, আন্তর্জাতিক সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত চুক্তির বিকশিত মানগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেও বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়নি। যার ফলে, সবাই এ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মানতে নারাজ। এখন, শামস সম্ভবত ২৮১ নম্বর সাংবাদিক যাঁর নামে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা করা হয়েছে। এবং এই নিবর্তনমূলক আইনে মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করার ফলে কোন প্রতিকার আইনে না থাকায় আমাদের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা ও আইনের শাসনকে আরও জটিল এবং প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে।
লেখকঃ রেজাউর রহমান লেনিন