Site icon মুক্তিপত্র

দিল্লি সহিংসতা প্রসঙ্গে লেখক অরুন্ধতী রায়ের ভাষণ

প্রিয় বন্ধু, কমরেড, ও সহলেখকগণ

আমরা আজকে ঠিক যেই জায়গাটায় দাঁড়িয়ে আছি, তা সেখান থেকে মাত্র একটা বাসযাত্রার দূরত্বে অবস্থিত, যেখানে চারদিন আগে একটা উচ্ছৃঙ্খল ফ্যাসিস্ট জনতা, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সদস্যদের বক্তব্যে জ্বলে উঠে, পুলিশের মদতে ও তাদের সক্রিয় সহায়তায়, ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের একটা বড়ো অংশের সার্বক্ষণিক সমর্থনের নিশ্চয়তায়, এবং বিচারালয়গুলো তাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না এই বিশ্বাসে বলীয়ান হয়ে – উত্তর পূর্ব দিল্লির শ্রমজীবী মানুষদের কলোনিগুলোতে মুসলমানদের ওপর একটা সশস্ত্র, মারাত্মক আক্রমণ চালিয়েছে।

এমন একটা আক্রমণ যে আসন্ন, তা জানা ছিলো, তাই একরকম প্রস্তুতি ছিলো লোকজনের, এবং তারা রুখে দাঁড়িয়েছিলো। বাজার, দোকানপাট, ঘরবাড়ি, মসজিদ, ও যানবাহনগুলো পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। রাস্তাঘাট জুড়ে শুধু পাথর আর পোড়া জিনিশপাতির ধবংসাবশেষ। হাসপাতালগুলোতে আহত আর মরণাপন্ন মানুষদের ভিড় জমেছে। মর্গগুলো মৃতদেহে ভর্তি হয়ে আছে। মৃতদের মধ্যে মুসলমান আর হিন্দু দুই সম্প্রদায়ের মানুষই আছে। আছে একজন পুলিশ অফিসার এবং ইন্টিলিজেন্স ব্যুরোর এক তরুণ স্টাফার। হ্যাঁ। দুই দিকের মানুষেরাই আতঙ্কজনক নৃশংসতার পাশাপাশি অবিশ্বাস্য সাহস আর সদয়তার প্রমাণও রেখেছে।

যাইহোক, এখানে তুলনা টানার প্রশ্নই আসে না। এর কিছুই এই তথ্যটাকে পাল্টে দেয় না যে, আজকের এই বেআব্রু হয়ে যাওয়া ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রযন্ত্রের মদতপুষ্ট লুম্পেন জনতা “জয় শ্রী রাম” শ্লোগান দিয়ে আক্রমনটা শুরু করেছিলো। এইসব শ্লোগান সত্ত্বেও, এটা লোকে যাকে হিন্দু মুসলিম “দাঙ্গা” হিসেবে চিহ্নিত করে থাকে, তেমন কিছু ছিলো না। এটা ছিলো ফ্যাসিস্ট আর ফ্যাসিবিরোধীদের মধ্যে চলমান সংগ্রামের একটা বহিঃপ্রকাশ – যেখানে মুসলমানরা ফ্যাসিস্টদের ‘শত্রু’ তালিকার একেবারে শুরুতেই আছে। এটাকে “দাঙ্গা”, অথবা “বামপন্থী” বনাম “ডানপন্থী”-দের, এমনকি “সত্য” বনাম “মিথ্যা”-র লড়াই বলাটা; যেমন করছেন অনেকেই; বিপজ্জনক ও বিভ্রান্তিকর।

আমরা সকলেই সেই ভিডিওগুলো দেখেছি, যেখানে পুলিশ হয় সাক্ষী গোপালের ভূমিকা পালন করেছে, আর না হয় নিজেরাই অংশ নিয়েছে অগ্নিসংযোগে। আমরা তাদেরকে সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙতে দেখেছি, যেমনটা তারা (গত বছরের) ১৫ ডিসেম্বরেও করেছিলো, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে ভাঙচুর চালানোর সময়। আমরা তাদেরকে আহত মুসলমান পুরুষদেরকে পেটাতে দেখেছি, যাদের একজনের ওপর আরেকজনকে ফেলে রাখা হয়েছিলো, আর বাধ্য করা হচ্ছিলো জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার জন্য। আমরা জানি এই তরুণদের একজন মরে গেছে। এই সব মৃত, আহত, ও বিধবস্ত মানুষেরা; যাদের ভেতরে হিন্দু ও মুসলিম উভয়ই আছেন; সেই সরকারের শিকার, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি, আমাদের নির্লজ্জ ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী, যিনি আঠারো বছর আগে একটি রাজ্যে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা এরচে অনেক বড়ো আকারের একটা হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হবার সময় সেই রাজ্যের সর্বোচ্চ ক্ষমতার জন্য অপরিচিত কেউ ছিলেন না।

আসন্ন বছরগুলোতে এই সুনির্দিষ্ট খাণ্ডবদাহনের দেহতত্ত্ব নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলবে। কিন্তু স্থানীয় খুঁটিনাটিগুলো কেবল ঐতিহাসিক দলিলদস্তাবেজের বিষয়বস্তু হয়ে থাকবে, কারণ সামাজিক গণমাধ্যমে উসকে দেয়া ঘৃণাপূর্ণ গুজবের ঢেউ উঠেছে, তার ঘূর্ণাবর্তটার ছড়িয়ে যাওয়ার সূচনা ঘটেছে, এবং ইতোমধ্যেই আমরা বাতাসে আরো রক্তের ঘ্রাণ পেতে শুরু করেছি। যদিও উত্তর দিল্লীতে আর কোনো খুনোখুনি হচ্ছে না, গতকাল (২৯ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় দিল্লিতে উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে সেই শ্লোগানটা দিতে দেখা গেছে, যা দেয়ার মাধ্যমেই এই আক্রমণটা শুরু হয়েছিলোঃ “দেস কি গাদ্দারো কো, গোলি মারো সালো কো (যারা দেশের সাথে বেঈমানি করে, সেই শালাদেরকে গুলি করে মেরে ফেলো।)”।

মাত্র কয়েকদিন আগে, সাবেক বিজেপি এমএলএ প্রার্থী কপিল মিশ্রের বিরুদ্ধে কোনো অ্যাকশন না নেয়ার কারণে, দিল্লি উচ্চ আদালতের বিচারক জাস্টিস মুরালিধরণ দিল্লি পুলিশের ওপর প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন। কপিল অতীতে নির্বাচনী প্রচারণার সময় শ্লোগানটি ব্যবহার করেছিলেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি মাঝরাতে, এই বিচারককে, পাঞ্জাব উচ্চ আদালতে তার নতুন দায়িত্ব বুঝে নেবার নির্দেশ দেয়া হয়। কপিল মিশ্র সেই একই শ্লোগান দিতে দিতে রাজপথে ফিরে এসেছেন। এবার আর কোনো নোটিশ ছাড়াই শ্লোগানটা ব্যবহার করা যাবে। বিচারকদের নিয়ে ঠাট্টামশকরা আর খেলাধূলা তো নতুন কিছু নয়। আমরা সবাই বিচারক লয়ার কাহিনীটা জানি। আমরা হয়তো বাবু বজরঙ্গীর গল্পটা ভুলে গেছি, ২০০২এর গুজরাতে, নারোদা পাতিয়ায় ৯৬ জন মুসলমানকে হত্যায় অংশগ্রহণের দায়ে যাকে অপরাধী সাব্যস্ত করা হয়েছিলো। ইউটিউবে শুনুন তার বক্তব্যঃ সে আপনাকে বলে দেবে কীভাবে বিচারকদেরকে “সাইজ” করে “নরেন্দ্র ভাই” তাকে জেল থেকে ছাড়িয়ে আনবে।

নির্বাচনের আগে দিয়ে এই ধরণের হত্যাযজ্ঞের সম্মুখীন হতে আমরা শিখে গেছি – ভোটের মেরুকরণ ঘটানো আর কন্সটিটুয়েন্সি গড়ে তুলতে এক ধরণের বর্বরোচিত নির্বাচনী প্রচারাভিযানে পরিণত হয়েছে এটা। কিন্তু দিল্লি হত্যাযজ্ঞ ঘটেছে নির্বাচনের কয়েকদিন পরে, বিজেপি-আরএসএস একটা অপমানজনক পরাজয় বরণ করার পরে। এটা দিল্লিকে দেয়া একটা শাস্তি, এবং একইসাথে বিহারের আসন্ন নির্বাচনগুলোর জন্য একটা ঘোষণা।

সবকিছু খুল্লামখুল্লা হচ্ছে। কপিল মিশ্র, পারভেশ ভার্মা, ইউনিয়ন মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, এবং এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি – এদের সবার উসকানিমূলক বক্তব্যই সকলের দেখার ও শোনার জন্য সহজলভ্য। কিন্তু, এ-সত্ত্বেও, সবকিছু উল্টে দেয়া হয়েছে। দেখানোর চেষ্টা চলছে যে, সমগ্র ভারত একটা পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ, প্রধানত নারী, প্রধানত মুসলমান – কিন্তু শুধু তারাই নয় – প্রতিবাদকারীদের হাতে জিম্মি হয়ে আছে। এই হাজার হাজার নারী নাগরিকত্ব সংশোধন বিলের (সিএএ) বিরুদ্ধে ৭৫ দিন ধরে রাস্তায় রাত্রিযাপন করছেন।

সিএএ, যা অমুসলিম সংখ্যালঘুদের জন্য নাগরিকত্ব পাওয়ার দ্রুততম পথটা বাতলে দেয়, তা খোলাখুলিভাবে অসাংবিধানিক এবং খোলাখুলিভাবে মুসলমানবিরোধী। জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি (এনপিআর) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)র সাথে সম্মিলিতভাবে, এটা যে শুধু মুসলমানদেরকেই অবৈধীকৃত, অস্থিতিশীল, ও অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে তাই নয়; সেই লক্ষ লক্ষ ভারতীয়র ক্ষেত্রেও তাই করে, যাদের দরকারি কাগজপত্র নেই – আজকে যারা “গোলি মারো সালো কো (শালাকে গুলি করে দাও)” বলে চেঁচাচ্ছে, তাদেরকে সহ।

যখনই নাগরিকত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয়, প্রশ্নবিদ্ধ হয় সবকিছু – আপনার শিশুদের অধিকার, ভোটাধিকার, জমি অধিকার। হান্না আরেন্ডট যেমনটা বলেছেন, “নাগরিকত্ব আপনাকে অধিকার পাওয়ার অধিকার দেয়।” যারা মনে করেন বিষয়টা এরকম নয়, দয়া করে একটু আসামের দিকে তাকান, দেখেন সেখানে কী হয়েছে বিশ লক্ষ মানুষের সাথে – হিন্দু, মুসলমান, দলিত, আর আদিবাসীদের সাথে। এখন মেঘালয় রাজ্যে স্থানীয় আদিবাসী জনগণের সাথে অনাদিবাসীদের গ্যাঞ্জাম বেঁধে গেছে। শিলং-এ কারফিউ চলছে। অস্থানীয়দের জন্য রাজ্যের সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

এনপিআর-এনআরসি-সিএএর একমাত্র উদ্দেশ্য হলো, শুধু ভারতেরই নয়, বরঞ্চ পুরো উপমহাদেশের জনগণকে বিভক্ত ও অস্থিতিশীল করা। যদি তাদের আদৌ কোনো অস্তিত্ব থেকে থাকে, তাহলে ভূতের মতন এই লক্ষ লক্ষ মানুষকে, ভারতের বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যাদেরকে বাংলাদেশি “উঁইপোকা” বলেন, ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা যাবে না, নির্বাসিতও করা যাবে না। এই ধরণের পরিভাষা ব্যবহার করে; এবং এরকম একটা উদ্ভট, দানবীয় পরিকল্পনা হাতে নিয়ে; এই সরকার আসলে সেই লক্ষ লক্ষ হিন্দুকে বিপদে ফেলছে যারা বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ও আফগানিস্তানে বাস করেন। এই সরকার যাদের ব্যাপারে চিন্তিত হওয়ার ভাণ করে, যদিও নয়া দিল্লি থেকে উৎসারিত এই গোঁড়ামির নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ায় যাদেরকে যন্ত্রণা পোহাতে হতে পারে।

দেখেন আমরা কোথা থেকে কোথায় এসেছি।

১৯৪৭এ, আমরা উপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভ করেছিলাম, যার জন্য প্রায় সবাই লড়েছিলো – আমাদের বর্তমান শাসকরা ছাড়া। তারপর থেকে এই সময়টা পর্যন্ত আমাদের যাত্রাপথকে চিহ্নিত করেছে সব ধরণের সামাজিক আন্দোলন, জাতিভেদ প্রথা-বিরোধী লড়াই, পুঁজিবাদ-বিরোধী লড়াই, নারীবাদী লড়াই।

১৯৬০এর দশকে, বিপ্লবের ডাক ছিলো ইনসাফের ডাক, সম্পর্দের পুনর্বন্টন ও শাসক শ্রেণীকে উৎখাতের ডাক।

১৯৯০এর দশক নাগাদ, লক্ষ লক্ষ লোকের নিজেদের গ্রাম ও ভিটেমাটি থেকে স্থানচ্যুতকরণের শিকার হওয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সীমিত হয়ে পড়েছিলাম আমরা, সেইসব মানুষের, একটা নতুন ভারত গড়ে তোলার জন্য যাদেরকে ‘কোল্যাটারাল ড্যামেজ’ বানানো হয়েছিলো, যেই ভারতের ৬৩ জন ধনীতম ব্যক্তির হাতে ১২০ কোটি মানুষের পেছনে ব্যয় হওয়া বাৎসরিক বাজেটের চেয়েও বেশি অর্থ আছে।

এখন আমরা আমাদের নাগরিক অধিকার পাওয়ার জন্য সেইসব মানুষের কাছে মিনতি করায় সীমিত হয়ে পড়েছি, এই দেশটাকে গড়ে তোলার সাথে যাদের কোনো সম্পর্কই নেই। আর যখন আমরা করে চলেছি এই মিনতি, ঠিক তখনই আমরা দেখতে পাচ্ছি রাষ্ট্র তার নিরাপত্তা সরিয়ে নিচ্ছে, পুলিশকে সাম্প্রদায়িক করে তোলা হচ্ছে, বিচারবিভাগ ধীরে ধীরে পরিত্যাগ করছে তাদের দায়ভার। যেই গণমাধ্যমের কথা ছিলো আরামে থাকা মানুষদেরকে অস্বস্তিতে ফেলা আর অস্বস্তিতে থাকা মানুষদেরকে সান্ত্বনা দেয়া, তারা ঠিক এর উল্টোটা করছে।

জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদাটাকে অসাংবিধানিকভাবে ছেঁটে দেয়ার আজকে ২১০তম দিন। হাজারো কাশ্মীরী, যাদের মধ্যে আছেন, তিনজন সাবেক মুখ্যমন্ত্রীও, জেলে পচে মরছেন। ৭০ লক্ষ মানুষ একটা ভার্চুয়াল তথ্য ঘেরাওবন্দী দশায় বাস করছে, যা মানবাধিকারের ব্যাপক লঙ্ঘনের একটা অভিনব উদাহরণ। ২৬ ফেব্রুয়ারি, দিল্লির সড়কগুলোকে দেখাচ্ছিলো শ্রীনগরের সড়কগুলোর মতো। এইদিন কাশ্মীরী শিশুরা সাত মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো ইশকুলে যেতে পেরেছে। কিন্তু যখন আপনার চারপাশের সমস্তকিছুর শ্বাস রোধ করা হচ্ছে, তখন ইশকুলে যাওয়ার আদৌ কী কোনো মানে থাকে?

কোনো গণতন্ত্র, যা একটা সংবিধান অনুসারে চলে না, এবং যার প্রতিষ্ঠানগুলোকে ফোঁপড়া বানিয়ে ফেলা হয়েছে, তা কেবলমাত্র একটা সংখ্যাগরিষ্ঠতাবাদী রাষ্ট্রেই রূপান্তরিত হতে পারে। আপনি একটা সংবিধানের সমগ্রটুকুর সাথে, বা এর অংশবিশেষের সাথে, একমত হতে, বা দ্বিমত পোষণ করতে, পারেন। কিন্তু এমনভাবে ক্রিয়া করা যেনো এটার কোনো অস্তিত্বই নেই, যা এই সরকার করছে, গণতন্ত্রকে বেআব্রু করে ফেলে। সম্ভবত সেটাই তাদের উদ্দেশ্য। এই হলো করোনাভাইরাসের ভারতীয় সংস্করণ। আমরা অসুস্থ।

দিগন্তরেখায় দেখা যাচ্ছে না কোনো সহায়তার চিহ্নটুকুও। কোনো ভালো-চাওয়া বিদেশি রাষ্ট্রকে। কোনো জাতিসংঘকে।

আর নির্বাচনে জিততে চায়, এমন কোনো রাজনৈতিক দলেরই একটা নৈতিক অবস্থান নেয়ার সামর্থ্য নেই, ইচ্ছাও নেই। কারণে রন্ধ্রে রন্ধ্রে আগুন জমে আছে। পতন ঘটছে ব্যবস্থাটার।

আমাদের এমন মানুষদেরকে দরকার যারা অজনপ্রিয় হতে প্রস্তুত। যারা নিজেদেরকে বিপদে ফেলতে প্রস্তুত। যারা সত্য বলতে প্রস্তুত। সাহসী সাংবাদিকরা সেটা করতে পারে, এবং করছেও। সাহসী আইনজীবীরা সেটা করতে পারে, এবং করছেও। আর শিল্পীরা – সুন্দর, প্রতিভাবান, সাহসী লেখক, কবি, গায়ক, চিত্রকর, এবং চলচ্চিত্রকাররাও সেটা করতে পারে। সেই সৌন্দর্যটুকু আছে আমাদের দিকে। সম্পূর্ণটাই।

আমাদের কাজ আছে। জেতার জন্য একটা দুনিয়াও।

অরুন্ধতি রায়ের ভাষণটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন মুক্তিফোরামের সম্পাদক ইরফানুর রহমান রাফিন

Exit mobile version