১৯৭৩ সালের মার্চে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷
ঐ নির্বাচনে ওসমানী তার নিজের এলাকা থেকে অংশ নেন এবং নির্বাচনে অভাবনীয় সাফল্য লাভ করেন৷ সেই নির্বাচনে ওসমানী ৯৪ শতাংশ ভোটে বিজয়ী হয়েছিলেন৷ ডাক, তার, টেলিযোগাযোগ, অভ্যন্তরীণ নৌ যোগাযোগ, জাহাজ ও বিমান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেন। ১৯৭৪ সালের মে মাসে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে একদলীয় বাকশাল ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হলে তিনি সংসদ সদস্যপদ এবং আওয়ামী লীগের সদস্যপদ ত্যাগ করেন।
স্বাধীনতার পর ওসমানীকে বাংলাদেশ সরকার ‘জেনারেল’ পদে পদোন্নতি দেয়। তিনি পেনশন পেতেন ‘জেনারেল’ হিসেবে। কিন্তু জিয়াউর রহমানের শাসনামলে তাঁর পদাবনতি ঘটিয়ে কর্নেল করা হয়। ওসমানী এর প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন। দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় এ বিষয় নিয়ে প্রকাশিত হতে থাকে প্রচুর লেখা। একদিন অন্তরঙ্গ পরিবেশে কর্নেল হামিদ জিয়াউর রহমানকে ওসমানী প্রসঙ্গে বললেন, ‘তুমি জেনারেলের ফাইলটি আটকে রেখেছ কেন? ওটা ছেড়ে দাও না।’
উত্তরে জিয়াউর রহমান বললেন, ‘এই কথাটি ওসমানী আমাকে বলতে পারেন না?’ কর্নেল হামিদ জানতেন, ‘ওসমানী কখনো জিয়াউর রহমানকে ফোন করবেন না এবং করেনওনি। হাইকোর্টের মাধ্যমে তিনি অর্জন করেন তাঁর জেনারেলের স্বীকৃতি ও সুবিধা। পুরো জীবনজুড়েই এমন প্রবল আত্মসম্মানবোধ নিয়েই বেঁচেছেন ওসমানী।
‘যোদ্ধা’ আজন্মই যুদ্ধ করেন। কখনো যুদ্ধের ময়দানে। কখনোবা নিজের নৈতিকতার সাথে।
এমন ‘যোদ্ধা’ ব্যক্তিত্বের জন্ম আমার পূণ্যভূমিতে।
আসিফ আদনান মুক্তিফোরামের একজন সংগঠক