আমাদের হাতে অপশন খুব কম আসলে। বেঁচে থেকে অন্যকে বাঁচতে দেয়া, আক্রান্ত হয়ে সাথে আরও কিছু মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া। খুবই সহজ ভাবেই আসলে বাঁচা যায়। সব কাজ কর্ম থেকে ছুটি নিয়ে বাসায় বসে ঝিমানো, একবিংশ শতাব্দীতে ঘটা নেটওয়ার্ক বিপ্লবের ফলে পৃথিবীর অধিকাংশ জনগন এই কাজটা খুব সহজ ভাবেই করতে পারে। তৃণমূল জনসংখ্যা এর কথা বাদ দিলাম, তারা এমনিতেও সারাবছর না খেয়ে মরে। বাদবাকি যে মানুষেরা রয়েছে তারা এখন অকর্মণ্য হয়ে থাকতেও পছন্দ করছে না। অন্যসময় সময় কাটতো ফ্রেন্ডদের নিয়ে, এখন সময় কাটছে ট্রেন্ডদের নিয়ে। তাও আটকে থাকুক।
হিসেব করে দেখলে এই রোগ বাংলাদেশে ইতালির রূপ নিতে আর তিন সপ্তাহের মতো লাগার কথা। তখন হাসপাতালে রোগী রাখার জায়গার সংকট দেখা দিবে না। মর্গে কিংবা গোরস্থানে লাশ রাখার জায়গার সংকট দেখা দিবে। সেই হিসেবে সরকারের উচিৎ এতো টাকা হাসপাতালে খরচ না করে গোরস্থানের সংখ্যা বৃদ্ধিতে ব্যবহার করা। অন্তত দুর্নীতি কম হবে। কিন্তু, কমাতে হলে জমাতে হয়। এখন কেবল আশাই জমানো বাকি। আশা ভোসলে গেয়েছিলেন, ‘হয়তো এই রাত আসবে না, যখন আর কাছে পাবো তোমায়’। কথা সত্য। এই রাত কেন, দিন ও আসবে না। আসলেও সেই দিনে পুলিশ এসে লাঠি নিয়ে দৌড়াবে। কিংবা আর্মি এসে পিছনের জায়গায় আক্রমণ করবে। আক্রমণ নাকি পৌনঃপুনিক হারে বাড়ছে। প্রথম মাসে হাতে গোনা দুই তিন জন আক্রান্ত হলেও আমেরিকা ইতালিতে মৃতের সংখ্যা এখন পাঁচ হাজারের চেয়েও অনেক বেশি। আমাদের দেশে আসার কথা ছিল না অবশ্য। গরম দেশে নাকি আসে না এসব। হয়তো এবছর গ্লোবাল ওয়ারমিং কমে যাওয়ায় গরম ঠিকভাবে পড়তে পারেনি। আরেকটা কারণ ছিল হাতে, ধর্মপ্রান দের দেশে এসব আসে না। হয়তো এদেশের মানুষদের অযু হচ্ছে না ঠিক মতো। কে জানে, কতো তথ্যই তো জানি না এখনও। এই যেমন আমাদের মন্ত্রী জানেন না শব্দটা পিপিই নাকি পিপিপি। সংকট বাড়ছে, আতঙ্ক বাড়ছে। অন্তত কিছু একটা কমা দরকার। কিন্তু ঐযে, কমাতে গেলে আবার জমাতে হবে। এজন্য নেতারা সরকারী খাবার জমাচ্ছেন নিজেদের গুদামে। সেই গুদাম জব্দ করছেন আরেক নেতা। মাঝে মাঝে নেতাদের মাঝে এরকম টম এন্ড জেরি খেলা দেখতে ভালো লাগে। অন্যথায় সব খেলার আয়োজন ও তো থেমে আছে। কিছু নিয়ে ব্যস্ত থাকা দরকার।
কিন্তু হতাশ হওয়া যাবে না। হতাশা দুর্বলদের আসে, যেই জাতি করোনা ভাইরাসের চাইতে শক্তিশালী, তাদের হতাশা মানায় না। আমাদের সামর্থ্য নিয়ে সেতুমন্ত্রীর অগাধ বিশ্বাস। তিনি জানেন, বিশ্বাসে মেলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর। তাই তিনি তর্ক করতে যান না। তর্কে হেরে গিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মতো শো এর মাঝেই লাইন কেটে দেন না। কিংবা কে জানে, এদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মতো হয়তো উনার নেটওয়ার্ক ও দুর্বল। কতো কিছুই তো জানি না আমরা, সব জানতে হবে কে বলেছে?