আওয়ামীলীগের লোকজনও জানে হাসিনা এই গুলির নির্দেশনা দিয়েছে, এই ধরনের কর্মকান্ড হাসিনার জন্য নতুনও না; শাপলার ঘটনায় অনেক “সভ্য” শিক্ষিত আওয়ামীগারকে আমি বলতে শুনেছি এই ধরনের শক্ত হাতে দমন না করলে নাকি এই হুজুরদের কন্ট্রোল করা যেতোনা। দেশটা রাতারাতি আফগানিস্তান হয়ে যেতো। আওয়ামীলীগাররা কোনো বেসিক হিউম্যান রাইটসে বিশ্বাস করেনা, এটা তাদের পুরানো খাসলত।
এই ধরনের কর্মকান্ডের জন্য জাস্টিফিকেশানও তাদের কাছে আছে। প্রথম আলাপ যেটা দেয় তা হলো অন্যরাও খারাপ, তারাও ক্ষমতায় থাকার জন্য একই কাজই করতো। দ্বিতীয় জাস্টিফিকেশান হলো প্রগতিশীলতা, মুক্তিযুদ্ধ, নারী অধিকার, অসাম্প্রদায়িকতা, ইত্যাদি কতগুলো জার্গন নাকি পরস্পর সম্পর্কিত এবং আওয়ামীলীগ না থাকলে এইগুলা রক্ষা পায়না। তাই এগুলা রক্ষার জন্য হিউম্যান রাইটস ভায়োলেশন হালাল। আওয়ামীলীগের লোকজন যতো রেইপ করেছে তা অন্যান্য দল সবমিলিয়ে ১০℅ করেনি, শুধু ধর্ষন আর লীগ দুটো শব্দ গুগলে সার্চ দিলেই পাবেন। সার্চ রেজাল্ট স্তম্ভিত করে দিবে, তাও নাকি তারা নারীদের রক্ষা কবচ।
আওয়ামীলীগের লোকজন যতো হিন্দুদের জমি দখল করেছে তা কল্পনাতীত। খোদ গোপালগঞ্জে বেনজির যে পরিমাণ জমি একবারে হিন্দুদের কাছে জোর করে লিখে নিয়েছে তা আপনি গত একবছরে কেনো গত ৩০ বছরে কোনো দলের নেতাকর্মীর এই বিপুল পরিমাণ জমি দখলের প্রমাণ পাবেন না। তারপরও অসম্প্রদায়িক আওয়ামীলীগকে হিউম্যান রাইটস ভায়োলেট করার অধিকার দিতে হবে নাহলে দেশটা মাইনোরিটির জন্য নরক হয়ে যাবে।
প্রগতিশীলতা, মুক্তিযুদ্ধ, নারী অধিকার, অসাম্প্রদায়িকতা- এই শব্দগুলো একে অপরের সাথে সম্পর্কিত কোনো বিষয় না, এইগুলা আওয়ামীলীগ কিছু অপদার্থ অশিক্ষিত বাটপারদের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত আমাদের গেলাতে চেয়েছে৷ এরা প্রগতিশীল তবে হিউম্যান রাইটস চায়না, ভোট চায়না- এরকম প্রগতিশীল গোষ্ঠী পৃথিবীতে নাই; এরা মূলত কাল্ট পুজারি, আওয়ামী ধর্মে বিশ্বাসী, ধর্মের প্রেরিত পুরুষ শেখ হাসিনা যা করে ভালোর জন্য করে।
তৃতীয় জাস্টিফিকেশান সবচেয়ে ভয়ংকর। এরা বাংলাদেশের মানুষকে সাবহিউম্যান মনে করে। এইটার শুরুটা অনেক পুরোনো; একটি অনিচ্ছুক জাতির হাতে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলো বঙ্গবন্ধু বা একবারে মুক্তিযোদ্ধা সবসময়ের মুক্তিযোদ্ধা নয়, তবে একবারের রাজাকার সব সময়ের রাজাকার – এই ধরনের বক্তব্য সমাজে প্রচলিত করার অর্থ ছিলো বাংলাদেশের জনগণের রাষ্ট্রচিন্তা বা আওয়ামী বিরোধী মুক্তিযোদ্ধাদের বনসাই করে রাখা। বাংলাদেশের জনগণকে ডিহিউমানাইজ এরকম করে দেখতে দেখেছি ভারতীয় এস্টাব্লিশমেন্ট। যেভাবেই হোক বাংলাদেশের মানুষ বেসিক হিউম্যান রাইটস ডিজার্ভ করে না, তাই এদের চাবুক মেরে সোজা রাখতে পারবে, আর সেই অধিকার শুধু আছে টুঙ্গি পাড়ার শেখ হাসিনার।
আওয়ামী প্রীতি থাকা মানুষগুলোকে তাই কল রেকর্ডিং দিয়ে বোঝানোর দরকার নাই শেখ হাসিনা কতোটা খারাপ ছিলো; ওরা ভালো করেই জানে এই ধরনের নির্দেশনা দিতে পারে দেশের ভালোর জন্য। এই বিশ্বাসটা আসে দেশের জনগণকে ঊনমানুষ মনে করার কারনে তাই ঐসকল সাইকোপ্যাথদের বিশ্বাস করিয়ে বা না করিয়ে কোনো লাভ নাই। বরং গুরুত্বপূর্ণ আলাপ হলো এই অন্ধবিশ্বাসী লোকগুলো হিউম্যান রাইটস ডিজার্ভ করে কিনা৷ যদি করে তাহলে এদের কিভাবে ডিল করা যায় এবং না করে তাহলে এই মানুষগুলোর চেয়ে অন্যদের পার্থক্য ঠিক কতখানি?
মনজুরুল মাহমুদ ধ্রুব এই মুহূর্তে জার্মানিতে অবস্থানরত একজন রাজনৈতিক কমিউনিকেশন ও স্ট্র্যাটেজি বিশ্লেষক।