১৯৭১ হতে ২০২০–এই চার যুগেও স্বাধীন ভুখন্ডের একটি রাষ্ট্র ব্যতিত এদেশের মানুষের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক মুক্তির বিষয়গুলো প্রতিষ্ঠা হয়নি। বরং প্রতিষ্ঠিত হয়েছে শাসক ও শোষিত– এই দুটি শ্রেনী । অর্থনৈতিক বৈষম্যের দরুণ সৃষ্টি হয়েছে অতি উচ্চবিত্ত ও অতি দরিদ্রের শ্রেনী। সংস্কৃতির উপর এসেছে নিয়ন্ত্রন। গণমানুষের রাজনীতির স্বপ্ন ভেঙ্গে আজ বিনা ভোটে জনপ্রতিনিধির বাস্তবতায় হোঁচট খেয়েছে। সকলের সমান অধিকার আজ কাগুজে আইনে সীমাবদ্ধ। সেই আইন-কানুনেও রয়েছে শত অসংগতি।
আর এসব বিষয় নিয়েই তরুণদের বর্তমান রাজনৈতিক ভাবনা ও ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক প্রকল্পের সম্ভাবনাময় বিষয় নিয়ে এক আড্ডার আয়োজন করে মুক্তিফোরাম। শুক্রবার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে “রাজনীতির মুক্তি, মুক্তির রাজনীতি” শিরোনামের এই আড্ডায় যোগ দেন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর তরুণেরা। যাদের মধ্যে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মী যেমন ছিলেন ।তেমনি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ও গবেষক।
মুক্তিফোরাম এ সময় সেইসব সম্ভাব্য রাজনৈতিক প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করে। যেগুলো সময়োপযোগী ও মানুষের মুক্তির ক্ষেত্রে অবদানযোগ্য। ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক প্রকল্পের মধ্যে স্থান পায় মুক্তিবাদ, বহুত্ববাদ ও জনপন্থা।
এ সময় মুক্তিফোরামের মৌলিক রাজনৈতিক আদর্শের বিষয়ে বর্ণনা করেন অনুপম দেবাশীষ রায়। পরবর্তীতে আলোচনা হয় মুক্তিফোরামের লক্ষ্য নিয়ে। যেখানে রাজনৈতিক গণতন্ত্রায়ণ নিয়ে আলোচনা করেন আসিফ ইমরান। একে একে বিউপনিবেশায়ন নিয়ে আলোচনা করেন আরাফ ইবনে সাঈফ ও আরিফ সোহেল। পরে আরিফ সোহেল পরিবেশবাদ নিয়েও মুক্তিফোরামের একটা সুস্পষ্ট অবস্থান ব্যক্ত করেন। যা কিনা রাজনৈতিক সংগঠনগুলো এখনো জোরালোভাবে আমলে নেয়নি।
মুক্তিফোরামের আয়োজিত এই আড্ডায় অংশ নিতে এসেছিলেন রাষ্ট্রচিন্তার ফরিদুল হক ও রাখাল রাহা। তিনি তরুণদের সাথে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে আলাপ করেন।
এছাড়াও ছিলেন বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসেবে সুপরিচিত মিজানুর রহমানও যোগ দেন এই আড্ডায়। তার মতে তরুণদের প্রতিবাদী হতে হবে। যাতে করে সমাজের ও রাষ্ট্রের নেতিবাচক আচরণ রুখতে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায়।
মুক্তিফোরাম আয়োজিত এ সান্ধ্যকালীন আড্ডায় আরো কিছু বন্ধুসংগঠন যোগ দিয়েছিলো। নবীন ফোরাম, রাষ্ট্রচিন্তাসহ এসেছিলো ফিউচার বাংলাদেশ। সবার সরব উপস্থিতিতে বোঝা গিয়েছিলো রাজনীতি থেকে তরুণরা এখনো মুখ ফেরায়নি।