বিএনপির তরফ থেকে ড. জোবাইদা রহমানের জন্য বিশেষ সিকিউরিটি ডিটেইল চাওয়া হয়েছে।
যদিও ড. রহমান কখনো কোন সরকারী উচ্চ পদে ছিলেন না, এবং এমপি বা মন্ত্রীও হননি, তথাপি এই ডিটেইল চাওয়াকে আমি খারাপ চোখে দেখি না।
তিনি বিবাহসূত্রে ভিআইপি এবং রাষ্ট্রীয় বিশেষ বিবেচনায় এই ডিটেইল পেতেই পারেন।
তবে আমাকে ভাবাচ্ছে অন্য কিছু।
১। তার ডিটেইলের বহর দেখে মনে হচ্ছে তিনি খুব এক্টিভ থাকবেন।
তারমানে কি পুরনো সেই স্পেকুলেশনটিই সত্য?
তারেক রহমান কি তার সহধর্মিণীকেই প্রপ-আপ করছেন নির্বাচনে বিএনপির কাণ্ডারি হওয়ার জন্য?
ড. রহমানের পলিটিক্যাল ক্যারিয়ার আনব্লেমিশড। ২০০১-২০০৬ এর বিএনপি শাসনামলে তাকে বিভিন্ন ফটো অপে অংশ নেয়া ছাড়া আর কোন ভূমিকায় দেখা যায়নি। তথাপি আওয়ামী ফ্যাসিষ্ট সরকার তাকে বিভিন্ন দূর্নীতি মামলায় জড়িয়ে, ক্যাঙ্গারু কোর্ট দিয়ে সাজা ঘোষণা করিয়ে তাকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছে।
এতে মোটেই লাভ হয়নি।
বরঞ্চ রাজনৈতিকভাবে ড. রহমান প্রায় বিনা কষ্টে ন্যাশনাল রেকগনিশন পেয়ে গেছেন, যা যেকোন আপ-এণ্ড-কামিং রাজনীতিবিদের জন্য আরাধ্য। কেইস ইন পয়েন্ট হলো এনসিপির এনআরবি পলিটিশিয়ানদের উইং। তাদের ন্যাশনাল রেকগনিশন পেতে আরো অনেকদূর যেতে হবে, যেটা ড. রহমান ঘটনাচক্রে পেয়ে গেছেন।
বরঞ্চ রাজনৈতিকভাবে ড. রহমান প্রায় বিনা কষ্টে ন্যাশনাল রেকগনিশন পেয়ে গেছেন, যা যেকোন আপ-এণ্ড-কামিং রাজনীতিবিদের জন্য আরাধ্য। কেইস ইন পয়েন্ট হলো এনসিপির এনআরবি পলিটিশিয়ানদের উইং। তাদের ন্যাশনাল রেকগনিশন পেতে আরো অনেকদূর যেতে হবে, যেটা ড. রহমান ঘটনাচক্রে পেয়ে গেছেন।
এবং তিনি তার বাড়ির গেইটের জন্য আর্চ ওয়েও চেয়েছেন। তার মানে তিনি আশা করছেন অনেকেই তার সাথে তার বাড়িতে দেখা করতে আসবেন।
যা ইঙ্গিত দেয় রাজনীতিতে পুরোপুরিভাবে পা রাখার বাসনাকে।
২। এই আবেদনের আরো একটি লক্ষণীয় বিষয় হলো তার নিজ পৈতৃক বাড়িতে অবস্থানের আকাঙ্খাটি।
খুব স্বাভাবিকভাবেই শ্বাশুড়ি খালেদা জিয়ার সাথে একই বাড়িতে সহাবস্থান করতে চাওয়াই স্বাভাবিক ছিল। মিসেস জিয়া টাওয়ারিং ফিগার, এবং রাজনৈতিক প্রজ্ঞা অনেক বেশি। তার আন্ডারে এপ্রেন্টিসশিপ নিয়ে রাজনীতির ভিত গড়ে তুলতে চাওয়াই স্বাভাবিক ছিল বলে অনেকে মনে করতে পারেন।
তবে বিষয়টিকে আমি আমি ভিন্নভাবে দেখছি।
ড. রহমান কি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের ছায়ার বাইরে নিজের স্বতন্ত্র রাজনৈতিক পরিচয় গড়ে তুলতে চাইছেন?
যদি চান, তবে সেটি খুবই স্মার্ট একটি স্ট্রাটেজিক প্লে হবে।
তিনি একজন চিকিৎসক, একজন মা, একটি টপ লেগ্যাসি পলিটিক্যাল ফ্যামিলির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। কিন্তু তার পরিচয় এটুকুতেই শেষ। তিনি রাজনীতিবিদ হিসেবে কেমন হবেন, সেটা তিনি এই লেগ্যাসির ছায়া থেকে কিছুটা না বেরুলে আমরা বুঝতে পারবো না।
নিজের স্বতন্ত্র রাজনৈতিক পরিচয়, ইমেজ এবং বলয় গড়ে তুলতে খালেদা জিয়ার সাথে সহাবস্থান তার অনূকুলে যেতো না। তার শ্বাশুড়ির ছায়ায় ঢাকা পড়ে যেতেন। তাই আমি মনে করি তার নিজ পৈতৃক বাড়িতে অবস্থানের সিদ্ধান্ত তার আগামী রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের জন্য ভালো হবে।
পরিশেষে, ড. রহমানকে ওয়েলকাম এবং শুভকামনা। অনেক বছর পর উনি নিজ মাতৃভূমি, অনেক প্রিয়জনদের সামনাসামনি দেখবেন, এটি একটি বিশেষ অনুভূতি।
আমার মনে আছে, ফাহাম ভাই মুখ ভর্তি সুখী মানুষের হাসি নিয়ে বিমানবন্দরেই সেল্ফি পোষ্ট করে ফেলেছিলেন। তিনি বাংলাদেশে পা রেখেছেন, এটা জানাতে তার তর সইছিলো না। খুব সম্ভবতঃ এটি ছিল ফেসবুকে তার একমাত্র সেল্ফি।
সেই হাসিটা আমার এখনো মনে আছে। যেকোন মানুষ সত্যিকারের আনন্দিত হলেই এই হাসি হাসে।
আশা করি ড. রহমানও তেমনি একটি সেল্ফি পোষ্ট করবেন।
সত্যিকার আনন্দিত মানুষের হাসি দেখার মধ্যেও আনন্দ আছে।
আদিল মাহমুদ একজন গবেষক ও চিন্তক
Leave A Reply