তসলিমা নাসরিন যে কায়দায় ‘মুসলিম বলেই জঙ্গী’ বিশেষণ দেন, সেই একই কায়দায় প্রতিটি ন্যায্য আন্দোলনকে ‘শিবির’ জামাত বলার কালচার শুরুর বাহবাটি পেতে পারে ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ নামের সোনার ছেলেরা। আমাদের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনে তিনজন হিন্দু ছাত্রকে তারা পিটিয়েছে শিবির বলে। বুয়েটের আবরারকে মেরেছে শিবির বলে। হাত-পা ভেঙে দিয়েছে বহু ছাত্রের শিবির বলে। প্রশ্ন হচ্ছে- শিবির হলেই মেরে ফেলা যাবে, মারের জাস্টিফিকেশান আদায় করা যাবে এটা বাংলাদেশের কোন সংবিধানের কততম ধারায় লেখা আছে?

আমি আশংকা করি শেখ রেহানার বান্ধবী আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ডক্টর ফারজানা ইসলাম আমাদের আন্দোলনটিকে ডিহিউম্যানাইজ করার জন্য বারবার শিবির জামাত হিসেবে ট্যাগ দিবেন। ইতিমধ্যে জাবির প্রশাসনের ক্ষমতা ব্যবহার করে উনি খাবারের দোকান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন, হলগুলোতে পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। নিজের গদি বাঁচাতে তিনি কতটা নিচে নামবেন আমি জানিনা। কিন্তু আমি আশংকা করি তিনি আরও পুলিশ চেয়ে আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক এবং আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নামে আরও কুৎসা রটাবেন, প্রয়োজনে পেটাবেন এবং এই আন্দোলনকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করবেন।

নিজের স্বামীকে পিএইডি ডিগ্রি দেয়া, ছাত্রলীগকে চাঁদা দেয়া, ছাত্রলীগকে নিজের সহকর্মীদের ও শিক্ষার্থীদের মার দেয়ার লাইসেন্স দেয়া, নিয়োগ বাণিজ্য করাসহ অসংখ্য অপরাধ করে চলা এই নারীটির জন্য আমার ঘৃণা। একজন চূড়ান্ত বেহায়া ভিসিকে আমি শিক্ষক হিসেবে মানিনা।

ফারজানা ইসলাম, এইযে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলোকে দেখছেন এঁদের বিরুদ্ধে আপনি পুলিশ লেলিয়ে দিয়েছেন, ছাত্রলীগ তাঁদের গায়ে হাত তোলায় বাহবা দিয়েছেন। আপনার অন্যায় নিয়ে সরব হওয়ায় পোষ্য কোটায় চাকরি দেয়া, টাকা নিয়ে চাকরি দেয়া ক্যাডার শিক্ষকদের দিয়ে, রিভলবার প্রকাশ্যে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো ছাত্রলীগের সোনার ছেলেদের দিয়ে পিটিয়েছেন ছাত্রদের।

আর তাঁরা প্লাটুন প্লাটুন পুলিশের সামনে নিজেদের বুক পেতে দাঁড়িয়ে আছেন শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে।

আপনিও মানুষ, তাঁরাও মানুষ, তফাৎ শুধু শিঁরদাড়ায়! আপনাকে ঘেন্না, আপনার জন্য থুতু। আপনার মুখে আমাদের শত শিক্ষার্থীর থুতু কি আপনি দেখতে পাচ্ছেন না?

জান্নাতুন নাঈম প্রীতি একজন সাহিত্যিক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী

Share.

মুক্তিফোরাম একটি মুক্তিবাদী, বহুত্ববাদী এবং জনপন্থী সমাজ নির্মাণের লক্ষ্যে গড়ে ওঠা সংগঠিত গণমঞ্চ। এর লক্ষ্য হলো নতুন ধরণের সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক চর্চা নির্মাণ। নোংরা হিসেবে রাজনীতির যে রূপকল্প এদেশের মানুষের কাছে নির্মাণ করা হয়েছে, সেটিকে চ্যালেঞ্জ করতে চায় মুক্তিফোরাম। আবার যেসব একক আদর্শ (যেমন বামপন্থা-ডানপন্থা) বা পরিচয়ের রাজনীতি (সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ, জাতিবাদ) দিয়ে জনগণের সংহতি ও বৈচিত্র্য হুমকির মুখে ফেলা হয়েছে তার একটি এন্টিডোট হয়ে ওঠাও মুক্তিফোরামের প্রকল্প।

1 Comment

Leave A Reply