নির্বাহী আদেশে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণের দাবি ভুল এবং বিপদজনক রাজনীতি। এই দাবি অভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনীতির মাঠে হাজির ছিল না, সদ্য আমদানীকৃত জিনিস। মানুষ গণহত্যার বিচার চেয়েছে, গণহত্যাকারীদের দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিও উঠেছে।
এনসিপি যে তিন দফা দিয়েছে তার ভেতরকার সবচেয়ে বড় ফাঁকটি হলো— নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করা হলে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের আর কোনো মেরিট থাকে না। আগে সর্বোচ্চ শাস্তি ঘোষণা করে বিচারে বসা যায় না। সেটা দুনিয়ার কারো কাছেই গ্রহণযোগ্য হবে না। আমাদের প্রথমত এবং প্রধানত দরকার ছিল বিচারের— একটা দৃষ্টান্তমুলক ন্যায়বিচার।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে— সরকার এনসিপি সহ ডানপন্থী গোষ্ঠীর চাপের মুখে হয়তো নতি স্বীকার করবে। কিন্তু সরকার যেন মাথায় রাখে— এই আন্দোলনকারীরা বিপুলা জুলাইয়ের খুব ক্ষূদ্র একটা অংশ মাত্র। জুলাইয়ের জনতার কেউই এখানে নেই
আমি এনসিপির সাম্প্রতিক কোনো পলিটিকাল অ্যাকশনেই সন্তুষ্ট না। তাও প্রকাশ্যে তাদের বিরোধিতা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কারণ আমরা সকলে সেটা করা শুরু করলে সম্ভাব্য ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী বিএনপির জন্য অটো ওয়াকওভার দেয়া হয়ে যায়। তারা যেন অবিকল পুরান স্টাইলের ক্ষমতাকাঠামোতে ফেরত যেতে না পারে— সেজন্য তাদের উপরও চাপ থাকাটা দরকার অবশ্যই। কিন্তু এনসিপি তার রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বকে একেবারে ন্যাংটো করে ফেললো।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে— সরকার এনসিপি সহ ডানপন্থী গোষ্ঠীর চাপের মুখে হয়তো নতি স্বীকার করবে। কিন্তু সরকার যেন মাথায় রাখে— এই আন্দোলনকারীরা বিপুলা জুলাইয়ের খুব ক্ষূদ্র একটা অংশ মাত্র। জুলাইয়ের জনতার কেউই এখানে নেই।
নির্বাহী আদেশে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ঘোষণায় সবচেয়ে খুশী হবে আওয়ামী লীগ স্বয়ং। ৫ আগস্টের পর এই প্রথম সত্যি সত্যিই তার পলিটিকাল লাইফ লাইন ক্রিয়েট হবে। কোনো বিচার প্রক্রিয়ায় না গিয়ে এ জাতীয় ঘোষণাকে রাজনৈতিক স্বেচ্ছাচারিতা হিসেবে বিশ্বব্যাপী প্রজেক্ট করতে পারবে। বিচারিক ক্ষেত্রে হেল্প করার জন্য যেসব ইন্টারন্যাশনাল পার্টনাররা আছেন— তারা হতাশ হবেন।
নির্বাহী আদেশে লীগ নিষিদ্ধ করে জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষ শক্তির হারানো ছাড়া অর্জনের কিছু নেই। কিন্তু যারা আন্দোলনে নেমেছে তাদের এটা ভাবার সময় নেই। তাদের অন্য এজেন্ডা আছে।
বাকী বিল্লাহ একজন গবেষক ও লেখক