করোনা ভাইরাস ইতিমধ্যে চীনসহ এশিয়ার কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এর সংক্রমণের ফলে এ পর্যন্ত ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, আর সংক্রমিত হয়ে বহু লোক নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে । এ ভাইরাস কিছুদিনের মধ্যে আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে এমন আশংকাও রয়েছে।
মনে করা হচ্ছে সার্স বা ইবোলার মতো প্রাণঘাতী ভাইরাসের মতোই করোনা ভাইরাস। তবে এটি সার্স বা ইবোলার চেয়েও অনেক বেশি বিপদজনক।
করোনা ভাইরাসটির আরেক নাম ২০১৯-এনসিওভি। করোনা ভাইরাসের অনেক রকম প্রজাতি আছে। এর মধ্যে মাত্র ৭টি মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে।
যেভাবে ছড়ায়
বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত হয়েছেন যে, এ ভাইরাসটি একজন মানুষের দেহ থেকে আরেকজন মানুষের দেহে দ্রুত ছড়াতে পারে।
করোনা ভাইরাস মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় এবং শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমেই এটি একজনের দেহ থেকে আরেকজনের
দেহে ছড়ায়। সাধারণত ফ্লু বা ঠাণ্ডা লাগার মতো করেই এ ভাইরাস ছড়ায় হাঁচি-কাশির মাধ্যমে।
লক্ষণ
* করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রধান লক্ষণ হলো শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া।
* এর সঙ্গে সঙ্গে থাকে জ্বর এবং কাশি।
* অরগ্যান ফেইলিওর বা দেহের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়া।
* হতে পারে নিউমোনিয়া।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাইরাসটি শরীরে ঢোকার পর সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিতে প্রায় পাঁচ দিন লাগে। প্রথম লক্ষণ হচ্ছে জ্বর। তার পর দেখা দেয় শুকনো কাশি। এক সপ্তাহের মধ্যে দেখা দেয় শ্বাসকষ্ট।
প্রতিকার
যেহেতু এই ভাইরাসটি নতুন, তাই এর কোন টিকা বা ভ্যাকসিন এখনো নেই এবং এমন কোন চিকিৎসা নেই যা এ রোগ ঠেকাতে পারে। তবে-
* রক্ষার একমাত্র উপায় হলো, যারা ইতিমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছে বা এ ভাইরাস বহন করছে- তাদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা।
* ডাক্তাররা পরামর্শ দিয়েছেন বার বার হাত ধোয়া, হাত দিয়ে নাক-মুখ স্পর্শ না করা, ঘরের বাইরে গেলে মুখোশ পরা।
* আপনি যদি অসুস্থ হয়ে থাকেন তাহলে মুখোশ পরুন, আর নিজে অসুস্থ না হলেও, অন্যের সংস্পর্শ এড়াতে মুখোশ পরুন। কেননা চীনের উহান শহরে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের সংস্পর্শে এসে কমপক্ষে ১৫ জন চিকিৎসাকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন এবং একজন চিকৎসকের মৃৃৃৃত্যু হয়েছে।
ভাইরাসটি এখন চীনের অন্যান্য শহর এবং চীনের বাইরে হংকং, ম্যাকাও, থাইল্যান্ড, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়শিয়া, অস্ট্রেলিয়াতেও ছড়িয়ে পড়েছে। গত মঙ্গলবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম এক ব্যক্তির দেহে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে বলে জানা গেছে।