আসল কথা বলবো? বলতে তো হবেই, তাইনা?
বেইলী রোডে আপনি দেখতে চান নাটক, কিন্তু ধরুন বিচারক-আইনজীবী এবং বিচার না পাওয়া ভুক্তভোগীকে বাঁচাবেন এমন ব্যক্তিবর্গ নিজের বা পরিবারের বিয়ের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিলেন। বার আর বেঞ্চ দেয়া আছে, শিল্পী আছে, পরবর্তীতে অনুষ্ঠান শেষে দর্শক আমরা – এমন থিয়েটার আর কি। বোঝাতে পারলাম?
এবং আমি দর্শক। সেই হিসাবে আমিও থিয়েটারের একজন। তবে আমি নিয়মিত দর্শক এমন দাবি করি না। থিয়েটার আমার প্রায়োরিটি লিস্টে থাকে। নাগরিক কর্তব্য হিসেবে প্রশ্ন করতে চাই। এই সৌন্দর্য ও সহাবস্থানের আর্থিক বিষয়ে একটি প্রশ্ন করতে চাই এবং একটা দায়িত্ব বলে মনে করি।
আমি আসলে আরেকটু আলোকিত ও উন্নত করতে মঞ্চ নাটক দেখতে যাই এবং সাথীদের নিয়ে প্রশ্ন করতে চাই। পারবো কি?
প্রশ্নটি হল… আসলে অনেকগুলো প্রশ্ন। মানে প্রশ্নসমূহ। বিচারক কী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করতে পারবেন? বিচারক যদি ব্যবহার করেও থাকেন, তবে কি তিনি আইনজীবীদের বন্ধু হবার আমন্ত্রণ জানাতে পারবেন? যদি জানানও, তবে কি একই আইনজীবী একই বিচারকের নিকট বিচার্য মামলাসমূহ নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানে আলাপ করতে পারবেন? আরেকটা প্রশ্ন। মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ তো একগাদা নির্দেশিকা দিয়েছিল সরকারি কর্মকর্তাদের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করবার ব্যাপারে। সেইগুলা তো দেখেছিলাম সরকারি শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও প্রয়োগ হয়েছিল। চাকরি চলে গিয়েছিল। তাহলে বিচারকদের ক্ষেত্রে কী এই নির্দেশনামা ব্যবহারযোগ্য?
যদি না হয়, তবে কি আমার জন্মের কিছুদিন পরে ১৯৮৮ সালে যখন আইন মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রস্তুতকৃত (জি, উচ্চ আদালতের সাথে আলাপ করে করেছিল) বিচারকদের নির্দেশিকাটি তৈরি হয়েছিল, তা প্রয়োগযোগ্য হবে? কেননা, নির্দেশিকায় প্রশ্নাতীতভাবে নিরপেক্ষ থাকতে বলা হয়েছে যতদূর সম্ভব। আরও বলেছে, বিচারকরা সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ নিয়ন্ত্রণ করবেন এবং যা জনপ্রিয় করে তোলে তা থেকে বিরত থাকবেন। এইগুলা কি তাঁরা মানেন? না মানলে, ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? হয় নাই! তাহলে এইসব হাসিখুশি ছবিসমূহ কি বেইলি রোডের থিয়েটারে অভিনয়?
যাক, আমি এই অভিনয়কে ভয় পাই।
কেউ হয়তো প্রশ্নের উত্তরসমূহকে?
লেখকঃ রেজাউর রহমান লেনিন, আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী