বিশ্ববাজারে এলপি গ্যাসের দাম কমে অর্ধেক হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) সৌদি আরামকো এলপি গ্যাসের কাঁচামাল প্রতি টন প্রপেনের দাম নির্ধারণ করেছে ২৩০ মার্কিন ডলার, যা আগের মাসে ৪৩০ ডলার ছিল। অন্যদিকে বিউটেনের দাম ঘোষণা করা হয়েছে ২৪০ ডলার, যা আগের মাসে ছিল ৪৮০ ডলার। বাংলাদেশে বসুন্ধরা বেক্সিমকো ওমেরার মত কোম্পানিগুলো প্রায় ৩০ শতাংশ প্রপেন ও ৭০ শতাংশ বিউটেনের মিশ্রণে এলপিজি সিলিনডার বাজারজাত করে।
বিশ্বব্যাপী এলপিজি গ্যাসের বড় ধরনের মূল্যপতনের মূখে ভারত গতকাল থেকে ১৪,২কেজি সিলিন্ডারের দাম ৬১,৫ রুপি কমিয়ে ৭১৪ (দিল্লি) থেকে ৭৪৪ (মুম্বাই) বা ৭৭৪ (কলকাতা) রুপি করেছে।
জানুয়ারিতে বাংলাদেশে এলপি গ্যাসের দাম এক লাফে বাড়ানো হয়েছে প্রায় ২০০ টাকা। গ্রাহক পর্যায়ে সিলিন্ডারের এলপি গ্যাস বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৫০ টাকা করে যদিও নভেম্বরে দাম ছিল ৮৫০ টাকা করে। ফলে দুই মাসের ব্যবধানে ১৩ কেজি ওজনের এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম বেড়েছে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা পর্যন্ত। ফেব্রুয়ারিতে আন্তর্জাতিক বাজারে বড় ধরনের দাম পতন হলে, বাংলাদেশে মাত্র ৫০ থেকে ৬০ টাকা কমানো হয়।
বর্তমানে ভারতে ১৪ কেজি সিলিন্ডারের দাম যেখানে ৭৪৪ রুপি, সেখানে বাংলাদেশে এক কেজি কম ১৩ কেজি সিলিন্ডারের দাম ১০০০ টাকার মত বা অঞ্চলভেদে তারও বেশি। তাই শুধু ভারতীয় হিসেবেই বাংলাদেশে ১৩ কেজি এপপি সিলিন্ডারের দাম প্রায় ২০০ থেকে ২২৫ টাকা বেশি।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের এলপিজি সিলিন্ডারে গ্যাসের চাপ কম থাকার দীর্ঘ ও প্রমাণিত অভিযোগ রয়েছে। অর্থাৎ গ্যাসের পরিমাণ এবং মূল্য উভয় দিক থেকেই জালিয়াতির সুস্পষ্ট অভিযোগ আছে এলপি গ্যাস বাজারজাতকারি কোম্পানি গুলোর বিরুদ্ধে। বাজারজাতকারি এলপি কোম্পানি গুলো সবসময়ই হয় এই অভিযোগ অস্বীকার করে ডিলার বা রিসেলারদের দুষেছে। যদিও মার্কেটে প্রোডাক্ট কোয়ালিটি সার্ভে তাদেরই দায়। মোটকথা গ্রাহক বিশেষ করে গ্রামীণ ভোক্তা দাম ও পরিমাণ উভয় দিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
বাংলাদেশের প্রচুর গ্রামীণ মানুষ সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করেন। শহরেও যারা সাপ্লাই গ্যাসের সংযোগ পাননি, নিন্মবিত্ত ও মধ্যবিত্তের যারা এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহার করেন এবং গ্রামে যারা এলপি সিলিন্ডার ব্যবহার করেন, এই সংকটের সময়ে তাঁদের সঞ্চয় বর্ধিত করতেও বিদ্যুৎ জ্বালানি, এল্পি গ্যাসের দাম কমানোর মত বিষয় গুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ।
উপরন্তু, আন্তর্জাতিক কাঁচামাল পণ্যমূল্য পতনের বাইরেও আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে। এক অংকের সুদ বাস্তবায়নের প্রভাবে দ্রুতই কম সুদে ব্যাংকিং ঋণ পাওয়া খাত থেকে উৎপাদিত পণ্যের দাম কমে আসার কথা। এলপিজি এমনই একটি খাত। সুতরাং এলপি গ্যাসের দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমার বহুমুখী জাস্টিফিকেশান তৈরি হয়ে রয়েছে।