সাম্প্রতিক অনেক রাজনীতিবিদদেরকেই দেখা যাচ্ছে যে তারা তাদের নির্বাচনী আসনে ব্যাপক পরিমানের ত্রাণ দিচ্ছে। তাদের কারনে অনেক লোক উপকৃত হইসে এবং হইতেসে। এই বিষয় নিয়ে আমি আসলেই খুব খুশি। যাক, হতদরিদ্ররা কিছুটা হলেও সাহায্য পাচ্ছে। কিন্তু যারা ত্রাণ দিচ্ছে, তাদেরকে কি আমি এখানে হিরো মনে করি? অবশ্যই না।
আমার মনে প্রথমেই যেই প্রশ্নটা আসছে তা হলো যে যার বেতন মাত্র ৫০-৮০ হাজার টাকা, সে হঠাৎ করে এতো টাকা পেলো কোথা থেকে? আমার মনে হয় সবারই এই প্রশ্ন করা উচিৎ। এখানে লক্ষনীয় বিষয় এই যে এদের মধ্যে বেশিরভাগ রাজনীতিবিদই কিন্তু কোনো ধরণের ফান্ডরেইসিং করে নাই তারা পুরো ত্রাণ তাই নিজের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে দিয়েছে। এখন আপনারা প্রশ্ন করতেই পারেন যে ভাই, চুরির টাকা হোক আর যেই টাকাই হোক, দিসে তো। সমস্যাটা এইখানেই টাকাটা চুরির। আমি যদি আপনার কাছ থেকে ১,০০০ টাকা চুরি করে আপনারই বিপদের সময় আপনাকে ৬০০ টাকা ধরায়ে দিয়ে খুব মহৎ সাজার চেষ্টা করি, এইটা কি হইলো?
এইটা তো গরু মেরে জুতা দানের ন্যায় হইলো। ওই ৬০০ টাকা পাওয়ার পরেও যেই আমি এখন দুর্যোগের সময় মহৎ সাজার চেষ্টা করছি ঠিক সেই আমার কারনেই কিন্তু আপনার পকেটে এখনো ৪০০ টাকার ঘাড়তি আছে। বাস্তবতাটা কিন্তু এই যে এই ১,০০০ টাকাটা পুরাটাই শুরু থেকেই আপনার পকেটেই থাকার কথা ছিলো। এই ১,০০০ টাকা দিয়ে আপনি হয়তো নিজ উদ্যোগেই দুর্যোগের সময় খাবার কিনে খেতেন। আপনার কাছ থেকে চুরি করা টাকার আংশিক অর্থ আপনাকেই দুর্যোগের সময় ফিরিয়ে দিয়ে আমি কিন্তু আপনার উপরে কোনো ধরণের রহম করছি না।
এখন হয়তো অনেকে বলতে পারেন যে হতে পারে কিছু রাজনীতিবিদরা আগে খারাপ ছিলো, কিন্তু এখন ভালো হয়ে গেছে। এটাও আমার কাছে মনে হয় নাই। আমার কাছে মনে হইসে যে এই পরিস্থিতিতে এই পরিমানের অর্থ ব্যয় করাটা তাদের জন্য লাভবান দেখেই তারা এই অর্থ ব্যয় করতেসে। অর্থাৎ তারা হিসাব করে দেখসে যে এই দুর্যোগে যদি তারা এক কোটি টাকার ত্রাণ দেয় তাহলে তারা ভবিষ্যতে এর বিনিময় জনগণের দুই কোটি টাকা মেরে খেতে পারবে। জনগণের এক কোটি টাকা লস হবে, তাদের এক কোটি টাকা লাভ হবে। যারা গত ২০-৩০ বছর ধরে চোখে নাকে মুখে জনগণের টাকা মেরে খাইসে, তাদের রাতারাতি জনদরদী হয়ে যাওয়ার কোনোই যুক্তিসংগত কারণ নাই।
শামস্ ইশতিয়াক রহমান, মুক্তিফোরামের একজন সম্পাদক।