যদি নারী এবং পুরুষেরা ভালোবাসা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়, তাহলে প্রথমেই আমাদের নারীবাদকে উপলদ্ধি করতে হবে। কারণ, নারীবাদী চিন্তা এবং চর্চা ছাড়া ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে তোলার ভিত্তিটি বড়ই নড়বড়ে হয়ে যায়। শুরুর দিকে, বিষম-কামী সম্পর্ক থেকে প্রাপ্ত হতাশা অনেক নারীদেরকেই নারী মুক্তির পথের দিকে ধাবিত করেছিল। এদের অনেকেই ভালোবাসা এবং একটি সুখি জীবনের প্রতিশ্রুতি থেকে প্রতারিত বোধ করেছে, যখন তারা বিয়ের পর তাদের ভালোবাসার পুরুষটিকে রুপকথার রাজপুত্র থেকে সংসারের পুরুষতান্ত্রিক প্রভুতে পরিণত হতে দেখেছিল। এসকল বিষমকামী নারীরা নারীবাদী আন্দোলনে যোগদানের সময় তাদের এই অভিজ্ঞতার তিক্ততা এবং তা থেকে জন্মানো তাদের ক্রোধগুলোকেও সাথে করে নিয়ে এসেছিল। তারা তাদের হৃদয়ের এই যন্ত্রণাটিকে সেই সকল সমকামী নারীদের সাথে একীভূত করে নেয়, যারাও তাদের মত পুরুষতান্ত্রিক মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে তাদের রোমান্টিক সম্পর্কগুলো গড়ে তুলে যেখানে বিশ্বাসঘাতকতা এবং প্রতারণা অনুভব করেছিল। আর ফলশ্রুতিতে, নারীবাদী আন্দোলনের শুরুর দিকে ভালোবাসার প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি এমন ছিল যে নারীমুক্তি একমাত্র তখনই ঘটবে যখন সকল নারীরা রোমাণ্টিক ভালোবাসা থেকে নিজেদেরকে বিচ্যুত করে ফেলতে পারবে।
আমাদের সচেতনতা বৃদ্ধির সমাবেশে বলা হয়েছিল, ভালোবাসার প্রতি আমাদের আকাঙ্ক্ষা হচ্ছে এমনি একটি লোভনীয় ফাঁদ, যার কারণে আমরা বারবার পুরুষতান্ত্রিক প্রেমিক এবং প্রেমিকাদের প্রেমে পড়তে থাকি, যারা এই ভালোবাসাকে ব্যবহার করে আমাদের বশীভূত এবং অধঃস্তন করে রাখতে চায়। কোন পুরুষের সাথে প্রথম শারীরিক সম্পর্ক করার পূর্বেই নারীবাদী আন্দোলনে যোগ দেওয়ার ফলে আমি খুবই বিস্মিত হয়ে দেখতে পাই যে কি পরিমাণ তীব্র ঘৃণা এবং ক্রোধ নারীরা পুরুষদের প্রতি প্রকাশ করতে পারে। যদিও তাদের এই রাগ এবং ক্রোধের ভিত্তি আমি বুঝতে পেরে ছিলাম। কিশোরী বয়সে আমার নিজের নারীবাদী চিন্তার দিকে ধাবিত হবার মূল কারণ ছিল বাড়িতে আমার বাবার একছত্র আধিপত্য বিস্তারের প্রতি আমার সরাসরি প্রতিক্রিয়া। একজন সামরিক বাহিনীর লোক, একজন ক্রীড়াবিদ, একজন ধর্ম যাজক, একজন দাতা, একজন নারীনিষ্পেষক হিসেবে তিনি ছিলেন পুরুষতান্ত্রিকতার মূর্ত প্রতীক। আমি আমার মায়ের যন্ত্রণাগুলো নিজের চোখে দেখেছিলাম, এবং এরপর আমি বিদ্রোহ করি। আমার মা তার প্রতি হওয়া আমার বাবার নির্যাতন এবং অসম্মানের বিরুদ্ধাচরণ, বা এর প্রতিবাদ কখনোই করেননি।
যখন আমি প্রথম সচেতনতা বৃদ্ধির সমাবেশে যাই, এবং সেখানে গিয়ে আমার মায়ের বয়সী নারীদের তাদের দুঃখ-যন্ত্রণা, এবং ক্রোধের কথা তুলে ধরতে দেখি, তখন তাদের জোর দিয়ে বলা হয়, “নারীদের উচিত ভালোবাসার সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসা” যা আমার কাছে অর্থপূর্ণ মনে হয়েছিল। কিন্তু তবুও আমি একজন ভালো-সংবেদনশীল পুরুষের ভালোবাসা চেয়ে ছিলাম, এবং আমি বিশ্বাস করতাম যে আমার পক্ষে সত্যিকারের ভালোবাসা খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে। তবে যাইহোক, একটা বিষয়ে আমি সম্পূর্ণ নিশ্চিত ছিলাম, যে পুরুষটিকে নারীবাদী রাজনীতিতে বিশ্বাসী হতে হবে। ৭০-এর দশকের শুরুর দিকে যেসব নারীরা পুরুষদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতে চেয়েছিল, তাদের সর্বপ্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল সেসকল পুরুষদের নারীবাদী চিন্তাধারার দিকে ধাবিত করা। যদি তারা নারীবাদী না হতেন, এটা নিশ্চিত ছিল যে সম্পর্কটি দীর্ঘস্থায়ী ভাবে সুখী হতে পারবে না।
‘পুরুষতান্ত্রিক ভালোবাসা’ অধিকাংশ মানুষের উপলদ্ধি অনুযায়ী একজন ব্যক্তিকে অনিশ্চিত করে তোলে, এরই সাথে তাকে ক্ষমতাহীন এবং নিয়ন্ত্রণহীন করে তোলে। নারীবাদী চিন্তাবিদদের মতে, ভালোবাসার এই দিকটি পুরুষতান্ত্রিক নারী এবং পুরুষদের উদ্দেশ্যকে তুলে ধরে থাকে। ভালোবাসার এই দিকটি এই মতবাদটিকেই সমর্থন করে থাকে যে একজন ব্যক্তি ভালোবাসার জন্য যেকোনো কিছু করতে পারে, সেটা কাউকে আঘাত করা হোক, কাউকে আবদ্ধ করে রাখা হোক, এমনকি কাউকে খুন করে, এরপর তাকে তীব্র আবাগের নামে চালিয়ে দেওয়া, এবং এরপর বলা “আমি তাকে এতটাই ভালোবাসতাম যে এর কারণে তাকে আমাকে খুন করতে হয়েছে”। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে ভালোবাসা হচ্ছে কোন কিছুকে নিজের দখলে রাখা, তার উপর নিজের আধিপত্য বিস্তার করা, এবং সে আধিপত্যকে গ্রহণ করে নেওয়ার সাথে সম্পর্কিত, এবং এখানে ধারণা করে নেওয়া হয় এই সম্পর্কে একজন হচ্ছে ভালোবাসা দাতা এবং আরেক জন ভালোবাসা গ্রহীতা। পুরুষতান্ত্রিক বিষমকামী সম্পর্কগুলো গঠিত হয় এই ধারনার উপর ভিত্তি করে, যে নারী তার সহজাত কোমল এবং যত্নশীল স্বভাব থেকে একজন পুরুষকে ভালোবাসা দেবে এবং যত্ন করবে, এবং বিনিময়ে একজন পুরুষ তার পুরুষ সুলভ কঠোরতা থেকে একজন নারীকে সুরক্ষা দেবে এবং তার ভরণ পোষণ বহন করবে। তবুও, অধিকাংশ বিষমকামী পরিবারগুলোতেই দেখা যায়, পরিবারের পুরুষটি নারীর হতে প্রাপ্ত যত্ন এবং ভালোবাসার কোন মূল্যায়ন করেন না, বরং তারা হয়ে ওঠেন স্বৈরাচারী শাসক যারা তাদের নিজেদের ক্ষমতাকে ব্যবহার করে জবরদস্তি, এবং সবকিছুকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে। শুরু থেকেই বিষমকামী নারীরা নারীবাদের আন্দোলনে এসেছিল তাদের এই হৃদয়ের জ্বালা প্রশমিত করতে, নিজেদেরকে এই যন্ত্রণাদায়ক ভালোবাসার সম্পর্কগুলো থেকে মুক্ত করতে।
উল্লেখযোগ্য ভাবে, তারা তখন এটাও তুলে ধরেছিল যে একজন নারীর কখনোই উচিত নয় শুধুমাত্র তার নিজের সন্তানের জন্য বাঁচা। এটিকেও তখন আরেক ধরনের ভালোবাসার ফাঁদ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছিল, যা একজন নারীকে তার নিজের স্বরূপকে পুরোপুরি উপলদ্ধি করতে বাধা দেয়। ‘একজন মা’, নারীবাদ আমাদের তখন সতর্ক করেছিল, যে তীব্রভাবে চেষ্টা করে তার সন্তানের মাঝে বাঁচতে, সেও তার সন্তানের জন্য একজন আধিপত্য বিস্তারকারী, নিষ্ঠুর ও অন্যায় শাস্তি প্রদানকারী দানবে পরিণত হতে পারে। যেসকল তরুণেরা অল্প বয়েসই নারীবাদী রাজনীতিতে যোগ দেয়, তাদের মধ্যে অনেককেই দেখা যায় তাদের আধিপত্য বিস্তারকারী মায়েদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে। আমরা তাদের মত হতে চাই না। আমরা তাদের থেকে আলাদা করে আমাদের জীবনকে গড়ে তুলতে চাই। আমরা তাদের থেকে আলাদা, এটা প্রমাণ করার একটি অন্যতম সহজ উপায় হচ্ছে সর্বদা সন্তানহীন থাকা।
শুরুর দিকে নারীবাদের জন্য ভালোবাসা নিয়ে সমালোচনা করা অতটা জটিল ছিল না। ভালোবাসার পুরুষতান্ত্রিক ধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ না করে, এটা তখন সম্পূর্ণ ভালোবাসাকেই একটা সমস্যা বলে মনে করতো। তখন আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল ভালোবাসাকে দূরে হটিয়ে দেওয়া, এবং তার জায়গায় অধিকার, এবং ক্ষমতা আদায়ের উদ্বেগকে বিস্তৃত করা। সে সময় কেউই আসলে এই বাস্তবতাটি কথা বলেনি যে, এর ফলে নারীদের তাদের হৃদয়কে কঠিন করে ফেলতে হবে, এবং এতে করে তারা একজন পুরুষতান্ত্রিক পুরুষের মতই হৃদয়হীন মানবে পরিণত হবে, এবং নারীবাদের নামে তারা কসাই নারীদের মত সকল আবেগকে প্রত্যাখান করতে থাকবে। আর বেশিরভাগ জায়গাতেই এই ঘটনাটিই ঘটেছিল। ভালোবাসার কথা পুনর্বার না ভেবে, এবং এর গুরুত্ব বিবেচনা না করে, ভালোবাসা নিয়ে নারীবাদ আলোচনাই বন্ধ করে দেয়। নারীরা যারা ভালোবাসা চাইতো, বিশেষ করে পুরুষদের সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাইতো, তাদের তখন অন্য পথে দেখতে হত যে তারা কিভাবে ভালোবাসা খুঁজে পেতে পারে। অনেক নারীরাই তখন নারীবাদ থেকে দূরে সরে আসে এই ভাবনা থেকে যে নারীবাদ ভালোবাসাকে, পারিবারিক সম্পর্কগুলোকে, এবং সমাজে অন্যদের সাথে মিলেমিশে বসবাস করার বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেয় না।
দূরদর্শী নারীবাদী চিন্তাবিদেরাও এ বিষয়ে সন্দিহান ছিল যে নারীদের ভালোবাসা নিয়ে কি বলা সঠিক হবে। নারীবাদী তত্ত্ব অনুসারে, প্রান্ত থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত আমি নারীবাদী নেতাদের নারীবাদের চর্চায় ভালোবাসার গুরুত্ব এবং উপলদ্ধি সংযোজনের প্রয়োজনীয়তার কথা লিখে গিয়েছি,“তাদের ভালোবাসা এবং সহমর্মিতা প্রকাশ করার ক্ষমতা থাকার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, তাদের কাজের মাধ্যমে তাদের ভালোবাসা প্রকাশ পেতে হবে, এবং ভালোবাসা নিয়ে আলোচনায় তাদের সফলভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে”। যখন আমি আমার বিশ্বাস তুলে ধরেছিলাম, “ভালোবাসা আধিপত্যকে রুপান্তর করতে কাজ করে”, সে সময় আমি অতটা গুরুত্ব দিয়ে লিখিনি যে এ ধরণের নারীবাদী তত্ত্ব তৈরিরও প্রয়োজন আছে যা সবাইকে ভালোবাসার স্বাধীন দিক নিয়ে একটি ধারণা দেবে।
পেছন ফিরে তাকালে এটি খুব সহজেই অনুধাবন করা যায় যে ভালোবাসা নিয়ে নারীবাদের কোন ইতিবাচক ধারণা এবং আলোচনা না থাকার ফলে, বিশেষ করে বিষমকামী সম্পর্কগুলোর ক্ষেত্রে, আমরা পুরুষতান্ত্রিক গণমাধ্যমগুলোকে সুযোগ করে দিয়েছি যে নারীবাদের সম্পূর্ন আন্দোলনটিকে রাজনৈতিক ভাবে একটি বিদ্বেষমূলক আন্দোলন হিসেবে প্রচার করার। অনেক নারীরা যারা পুরুষদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতে চেয়েছে, তারা অনুভব করেছে একই সাথে নারীবাদী আন্দোলনের সাথে যুক্ত থেকে তাদের পক্ষে ঐ সম্পর্কটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। কিন্তু বাস্তবে, আমাদের প্রচার করা উচিত ছিল যে নারীবাদই পুরুষ এবং নারীদের সত্যিকারের ভালোবাসা চেনাতে পারবে। এবং এটা আমরা এখন জানি।
দূরদর্শী নারীবাদ হচ্ছে একটি বিজ্ঞ এবং ভালোবাসাপূর্ণ রাজনীতি। আমাদের রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য হল যেকোনো ধরণের আধিপত্যকে শেষ করে দেয়া। ভালোবাসার সম্পর্ক কখনোই আধিপত্য এবং জবরদস্তির উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠতে পারে না। পুরুষতান্ত্রিক ভালোবাসার গোড়া নারীবাদী সমালোচনা কিন্তু বিপথগামী ছিল না। যাইহোক, নারী এবং পুরুষের কিন্তু সমালোচনার থেকে আরো বেশি কিছু প্রয়োজন রয়েছে বোঝার জন্য যে ভালোবাসার যাত্রায় তাদের ভুল টা কোথায় হয়েছে; আর আমাদের একটি বিকল্প নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গির দরকার ছিল। যেখানে অনেকেই আমরা আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে ভালবাসার দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম, যে ভালোবাসা নারীবাদের চর্চায়ই নিহিত, কিন্তু আমরা ভালোবাসা নিয়ে একটি বিস্তৃত আলোচনার জায়গা তৈরি করতে বিফল হয়েছিলাম, যা নারীবাদ নিয়ে গড়ে ওঠা বিদ্বেষমূলক, ভালোবাসা বিরোধী ধারণাগুলোকে মোকাবেলা করতে পারত।
আমাদের বিকল্প দৃষ্টি ভঙ্গির হৃদস্পন্দনের জায়গাটি কিন্তু এখনো অত্যন্ত মৌলিক এবং প্রয়োজনীয়, যেখানে আধিপত্য আছে সেখানে কোন ভালোবাসা থাকতে পারে না। নারীবাদী চিন্তা এবং চর্চা, রোমান্টিক সম্পর্কে এবং অভিভাবকত্বে পারস্পারিকতা বৃদ্ধি, এবং স্ব-উপলদ্ধিকরণের জায়গাটিতে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। সম্পর্কের এই দৃষ্টিভঙ্গির জায়গাটিতে যেখানে সকলের চাহিদাকে সম্মান দেওয়া হয়, যেখানে সবারই অধিকার আছে, যেখানে কোন আধিপত্য এবং নিষ্পেষণের ভয় নেই, এবং যেটা সবদিকেই পুরুষতন্ত্র সম্পর্কের যেই জায়গাগুলোকে তুলে ধরে তার বিরোধিতা করে।
আমাদের মাঝে অনেকেই ইতোমধ্যে, অথবা ভবিষ্যতে তাদের ব্যক্তিগত জীবনের সম্পর্কে পুরুষদের সানিধ্য লাভ করবে, সেটা হতে পারে কখনো একজন অভিবাকরূপি পরিচর্যাকারী হিসেবে, একজন বাবা হিসেবে, একজন ভাই হিসেবে, অথবা বিষমকামী নারীদের ক্ষেত্রে একজন রোমান্টিক সঙ্গী হিসেবে। বাস্তবে, নারী এবং পুরুষ উভয়ই যদি তাদের জীবনে নারীবাদী চিন্তা এবং চর্চাকে আলিঙ্গন করে, তাহলে এটা তাদের আবেগীয় সুস্থতা বৃদ্ধি করবে। খাঁটি নারীবাদী রাজনীতি আমাদের সবসময়ই বন্দী অবস্থা থেকে মুক্তির দিকে নিয়ে যায়, একটি ভালোবাসাহীন অবস্থা থেকে ভালোবাসার দিকে নিয়ে যায়। পারস্পরিক সম্পর্ক হচ্ছে ভালবাসার ভিত্তি। এবং নারীবাদী চর্চাই হচ্ছে সমাজে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার জন্য একমাত্র আন্দোলন, যেখানে পারস্পরিকতাকে লালন করা যায়।
যখন আমরা মেনে নেই যে সত্যিকারের ভালোবাসার মূলে রয়েছে স্বীকৃতি এবং গ্রহণযোগ্যতা, সেই ভালোবাসা স্বীকৃতি, যত্ন, দায়িত্বশীলতা, প্রতিশ্রুতি, এবং জ্ঞানকে সমন্বয় করবে,আর আমরা বুঝতে পারি যে ন্যায়বিচার ছাড়া কখনো ভালোবাসা সম্ভব নয়। এই সচেতনতার সাথে সাথে আমাদের এই উপলদ্ধিটিও চলে আসে যে ভালোবাসার রয়েছে আমাদের রুপান্তর করার ক্ষমতা, এটি আমাদের আধিপত্যের বিরোধিতা করার ক্ষমতা দেয়। কাজেই, নারীবাদী রাজনীতিকে বেঁছে নেওয়া মানে, একপ্রকারান্তে ভালবাসাকেও বেঁছে নেওয়া।
মূল লেখক: বেল হুক
অনুবাদক: ফারাহানা হক ফ্লোরা