আমি একজন সাধারণ ছাত্র, কোনদিন আমি বা আমার পরিবার এর কেউ’ই রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিল না বা থাকবেও না।

আমি আজকের নতুন প্রজন্ম। আমি আওয়ামীলিগ-বঙ্গবন্ধু-শেখ হাসিনা এগুলা শুনতে শুনতেই বড় হইসি। আমি বিএনপি-জামাত দেখি নাই, কিন্তু আমি চোখে দেখসি আওয়ামী দুঃশাসন-দুর্নীতি-দমন-পীড়ন, আমি ছাত্রদল দেখি নাই কিন্তু আমি ছাত্রলীগ দেখসি, আমি পাকিস্তান এর শোষণ দেখি নাই কিন্তু ভারতীয় আগ্রাসন দেখসি।  আমি ছাত্রদল-শিবির দেখি নাই, কিন্তু ছাত্রলীগ দেখসি। আমি ভাষা আন্দোলন দেখি নাই, কোঁটা আন্দোলন দেখসি। আমি ভাষা আন্দোলনে ছাত্রদের উপর গুলি দেখি নাই কিন্তু আমি কোঁটা আন্দোলন এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলন এ ছাত্রদের উপর গুলি এবং আক্রমণ দেখসি।

আমি ১৪ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি’দের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো বুদ্ধিজীবী হত্যা দেখি নাই, আমি ৬ই অক্টোবর হিন্দুস্তান এর বিরুদ্ধে দাঁড়ানো আবরার হত্যা দেখসি।

আমি নির্বাচন দেখসি কিন্তু আমার বাবা-মা কে ২০০৮ এর পর ভোট দিতে দেখি নাই। আমি ৯৬ এর নির্বাচন দেখি নাই কিন্তু ২০১৩ আর ২০১৯ এর নির্বাচন দেখসি।

আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখি নাই , আমি এরশাদ এর পতন দেখি নাই। কিন্তু আমি এগুলা দেখতে চাই। এগুলা দেখার সময় চলে আসছে। একটার পর একটা ঘটনা ঘটে, আমরা আন্দোলন করি, আমরা শুধু বিচার চাই, সমাধান চাই না, জবাবদিহিতা চাই না। বিচার চাওয়ার আন্দোলন করে সরকার এর দৌড়ানি খাই, দৌড়ানি খেয়ে সব ভুলে যাই, অপেক্ষা করি নতুন কোন ঘটনা ঘটার জন্য।

এগুলা ঘটতেই থাকবে যতদিন না পর্যন্ত আমরা সব ঘটনার ROOT CAUSE খুঁজে বের না করে সেটার জন্য গণ আন্দোলন এ না নামবো। সব ঘটনার মূল কারণ (ROOT CAUSE) হল একটি অগণতান্ত্রিক এবং অনির্বাচিত সরকার যার ক্ষমতার উৎস জনগণ নয় , জনগণ এর ভোট নয়।

এই সরকার এর ক্ষমতার উৎস হল ভারত। তাই এই সরকার এর জনগণ এর কাছে কোন জবাবদিহিতা নাই , জবাবদিহিতা আছে ভারত এর কাছে। জনগণ কে এই সরকার খুশি রাখতে চায় না , কোন দরকারও নাই। কিন্তু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এই সরকার এর ভারত’কে হিন্দুস্তান’কে খুশি রাখা দরকার। এগুলা আমরা সবাই জানি এবং বুঝি কিন্তু কেউ বলি না। আমাদের সবার নিজের জানের অনেক ভয়।

আমরা একজন একজন করে মরতে রাজি, কিন্তু দশ জন একসাথে মরতে রাজি না। মানুষের লাশ ছাড়া এই সরকার এর থেকে মুক্তি পাবেন না সোজা হিসাব। ১৯৭১ এ যেমন পাকিস্তানি সরকার থেকে দেশ টা মুক্ত করা লাগসে মুক্তিযুদ্ধ করে ঠিক ঐভাবেই হিন্দুস্তানি সরকার থেকে দেশ মুক্ত করার একটাই উপায়, তা হলো আরেকটা মুক্তিযুদ্ধ।

এইসব বাল-সাল বিচার চাই বিচার চাই আন্দোলন করে কিছুই হবে না। এখন আপনারাই চিন্তা করেন কি করবেন, আর কতদিন ঘুমাবেন। একজন একজন করে মরতে থাকবেন ? হিন্দুস্তানি গোলাম জাতি হিসাবে বেঁচে থাকবেন? নাকি এই হিন্দুস্তানি সরকার এর থেকে বাংলাদেশ’টা মুক্ত করবেন? চিন্তা করেন কি করা দরকার। খালি বিচার চাই বিচার চাই করে বাল টাও ছিঁড়তে পারবেন না কারো ।

লেখাঃ Bangladesher Dalal, BSc in Computer Science, University of British Columbia

Share.

মুক্তিফোরাম একটি মুক্তিবাদী, বহুত্ববাদী এবং জনপন্থী সমাজ নির্মাণের লক্ষ্যে গড়ে ওঠা সংগঠিত গণমঞ্চ। এর লক্ষ্য হলো নতুন ধরণের সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক চর্চা নির্মাণ। নোংরা হিসেবে রাজনীতির যে রূপকল্প এদেশের মানুষের কাছে নির্মাণ করা হয়েছে, সেটিকে চ্যালেঞ্জ করতে চায় মুক্তিফোরাম। আবার যেসব একক আদর্শ (যেমন বামপন্থা-ডানপন্থা) বা পরিচয়ের রাজনীতি (সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ, জাতিবাদ) দিয়ে জনগণের সংহতি ও বৈচিত্র্য হুমকির মুখে ফেলা হয়েছে তার একটি এন্টিডোট হয়ে ওঠাও মুক্তিফোরামের প্রকল্প।

Leave A Reply